আদা, পেঁয়াজ, রসুন বাটা
হবে আমার দোসর,
সাদা সর্ষে, কালো জিরা
হবে আমার শোধন।
অগ্নি আমার অশ্বশালা
অগ্নি আমার রাক।
অগ্নি আমার বীরাঙ্গনা
অগ্নি আমার তাপ।
শুঁকনো লঙ্কা, টকটকে লাল,
আমার অস্ত্রশালা,
ঝাঁজেই আমার স্বাদ জমেছে,
ঝাঁজেই আমার আলাপ।
ঝালেই হবে অসুর দমন,
ঝলেই হবে নিধন।
তেলের বন্যায় ভাসবে তুমি
করলে হুঁশিয়ারি,
সাদা, সর্ষে তেলের প্রলেপ
ভাঙবে তোমার গুঁড়ি।
ছুরি, কাঁচি, দা, বোটি,
ও কাস্তে আমার সখীগণ—
কীসের অস্ত্র? কীসের শস্ত্র?
রন্ধন আমার কামান, বোম!
ধোঁয়ার মাঝে লুকিয়ে রাখি
উপকরণের কৌশল,
জ্বলে উঠলে হাঁড়ির তলে
ডেকে ওঠে কোলাহল।
রান্না আমি করব না!
রান্না আমি বুঝব না!
ক্রীতদাস আমিই হব না!
রান্না আমি শিখব না!
স্নেহের কাঙাল,
প্রেমের কাঙাল,
অবলা, নির্বল পুরুষ!
রন্ধন নিয়ে কীসের দাপট,
যদি ভোগেই তোমার আপোষ?
রান্না করি আপন মনে
নিজের সুখের তরে,
রান্না করি প্রবল বেগে—
বিষাদ নেই কোনো কোণে।
রন্ধন আমার দক্ষ বিদ্যা,
রন্ধন আমার কুঞ্জ।
যদি তবে বাসও ভালো,
দৃষ্টি হবে গাঢ়।
রন্ধনে থাকে নারীর হৃদয়,
রন্ধন নয় কোনো দণ্ড।
সমাজ বলে —
“মেয়ে মানুষ যে, রান্না না জানলে হবে?।”
আমি বলি —
ভয় করি নে
তোমাদের এই মিথ্যাচারের নির্দেশ।
সমাজ বলে —
“রান্না না পারলে,
শাশুড়ি ধরবে চেপে!”
আমি বলি —
বেশ তো তবে,
দেখি কত জোর তার আছে?!
ভয়ভয় রান্না শিখব—
এ কি অনাসৃষ্টি?
পুরুষ জাতের মন পাওয়ার
এ এক পৃথক বিনোদন সৃষ্টি।
ছেলে তোমার ভারী মিষ্টি
ঠুঁটো জগন্নাথের স্বয়ং মূর্তি,
অকম্মার ধারী, অলস প্রজাতি,
রন্ধনে নেই তার বিন্দুমাত্র রুচি।
ছেলে ছেলে, বলে পাগল—
রন্ধনশালায় তার প্রবেশ বারণ!
ভেবে দেখ সমাজ সজন,
Chef যারা হয়, তারা
মানুষ কেমন?
কীসের বিবাদ, কীসের ভেদ?
কীসের দ্বন্দ্ব? কীসের ক্লেশ?
রন্ধন নয় শুধু নারীর বেশ,
রন্ধন শৈলী—শিল্পের রেশ।