এই যে রঙের ফাগুন  যেন প্রজ্জ্বলিত আগুন
কুয়াশা ভেদকরে উদিত অরুণ  
ডালে ডালে প্রস্ফুটিত শিমুল পলাশ
চারদিকে শুধু রঙের উচ্ছ্বাস
ঐ গোধূলিতেও লাল প্রবাহিত ।
সব লালের উৎস একটি বিন্দু, বাহান্নর একুশে রচিত।

এই বিকাশিত কথার মেলা
কবিতার আসরে ছন্দের খেলা
জারিসারি আর ভাটিয়ালি গান
বাউলের নেচে গেয়ে একতারার তান,
যে কথা আর সুরে বাংলার আকাশ সদা মুখরিত,
সব চঞ্চলতার একই উৎস, বাহান্নর একুশে রচিত।  

প্রভাতফেরীর এই মর্মষ্পর্শি সুর
কেন লাগে  এতো সুমধুর!
কারণ এখানে মিশে আছে শোকাতুর মায়ের কান্না
তারুণ্যের বিদ্রোহ, আর আগামীর প্রেরনা,
আজ তা আকাশ আর বাতাসে প্রতিধ্বণিত।
হৃদয় ছোঁয়া এই সুর, সে তো বাহান্নর একুশে রচিত।

বিশ্ব সভায় উড়ছে সবুজের বুকে লাল বৃত্ত
মানস পটে ভেসে ওঠে রক্তে আঁকা বাংলার মানচিত্র।  
যে ব্যথার গৌরব লুক্কায়িত  বুকে
তিরিশ লক্ষ জীবন  হাসে স্বর্গলোকে!
আমার ভাইয়ের তাজা রক্তে অঙ্কুরিত
স্বাধীনতার বীজ বাহান্নর একুশে রোপিত।  

বাঙ্গালীর চেতনা আর বিদ্রোহ ধারণ করে যে শহীদ মিনার
আমাদের সমস্ত আবেগ আর অশ্রুকে কাফনে মুড়ে-  
সযত্নে  আঁচল বন্দি রেখেছে বিশাল শোকের পাহাড়!
আকাশ ছোঁয়া তিন নেতার মাজারের সন্নিকটে তা হয়তো কিছুটা ম্লান
কিন্তু ব্যাপ্তিতে তা আমার স্বপ্নের সমান!
আমি জানি আগামী বিশ্ব সংস্কৃতি হবে বাঙ্গালী দ্বারা চালিত!
আমার এই স্বপ্নের মূল সূতিকাগার, সে তো বাহান্নর একুশে রচিত!


শাহাবাগের তারুণ্যের  অগ্নিষ্ফুলিঙ্গ
হঠাৎ জ্বলে ওঠা আগ্নেয়গিরির মত,
যুগের পর যুগ জমে থাকা ক্ষোভ আজ বিক্ষোভে রূপান্তরিত,
জনতার ঘৃনার বহ্নির রোষানলে ভস্মীভূত
পাকিস্তানী প্রেত্মাতা আর যাদের আঁচলে ওরা আশ্রিত।
এই প্রতিবাদী চেতনার  অগ্নিশিখা বাহান্নর একুশে প্রজ্জ্বলিত!  


" বাংলা আমার ভাষা"