আঁখি হতে অশ্রু যখন অঝোর ধারায় ঝরে
আমি কাঁপি থরেথরে,
আর ভাবি মনে মনে-  
বন্ধু আমার ছাড়লো ঘর কোন মায়াবীর টানে?
আমি অবাক হয়ে শুনি, অশ্রু কথা কয়,
বলে, বড় প্রেম দূরে ঠেলে শুনেছো নিশ্চয় ?
তোমার নয়ন মাঝে এক মায়াবিনী বিদেশিনীর বাস,
যার অঙ্গে অঙ্গে ছলনা আর বুকে বিষাক্ত নিঃশ্বাস ।
মিছে প্রেমে শূন্যে দোলায় , আবার ডুবায় অতলে,
ওর মায়াজালে বন্দী হয়ে কাঁদো পলে পলে।
নিখাদ  কতো প্রেম তোমায় ডাকছে অবিরত
দেখলে নাকো পিছু ফিরে কতো হৃদয় হলো ক্ষত।
উম্মাদ হয়ে ছুটছো ওই আলেয়ার পিছে ,
রংধনুকে ছুঁতে চাও? সে সাধনা মিছে !
নয়ন মাঝে নিবাস যার সাজাও বধু বেশে
সে অবিরত দহে হৃদয় আপন আশীবিষে ।
সেই যাতনায় তুমি ওগো জ্বলছো প্রতিক্ষণে
তাই নিদহীন যামিনী পার  নিঃস্পলক নয়নে।
যখন তুমি কষ্টে কাঁদো সে তখনে হাসে,  
তাইতো আমি বাইরে এলাম তোমায় ভালবেসে।
তোমার পরান শীতল করা আমারই তো কাজ,
যারে খুশি তারে রাখো তোমার হৃদয় মাঝ!
যার অনাদরে কাঁদো তুমি তার জন্য কি মায়া!
তবু আমি রাখবো পেতে মোর আঁচলের ছা্য়া!
মমতার পরশ দিয়ে করবো আলিঙ্গন,
একটু খানি শীতলতায় জুড়ায় যদি প্রাণ !
অদৃশ্য ক্ষনে আমি, ক্ষনে দৃশ্যমান ,  
ডাক শুনলেই দ্বার খুলেদেই, খুলি বাতায়ন ।
আমি তোমার বটছায়া চৈতি দখিন হাওয়া,
তোমার জন্য পারঘাটাতে আমার তরী বাওয়া।
তুমি ছন্দের  খোঁজে কল্পলোকে করো বিচরণ
আমি হই পদ্মমণি সরল  অভিধান।
তুমি যখন কাব্য রচো আমি গাঁথি সুর
আমার সুরের মূর্ছনায় দুঃখ কর দূর।
আমিই তোমার মহাকাব্যের চঞ্চল নায়িকা,
গ্রাম বাংলার গৃহলক্ষ্মী, কাজলা বালিকা।
আমি তপ্ত রোদে ছায়াকুঞ্জ, শেষ বিকালের সাথী,
আমার হাতেই জ্বলে তোমার নিশীথ রাতে বাতি।
আবার, ঘোর আঁধারে বাঁশ বাগানে জোছনা হয়ে জ্বলি,
আলো আঁধার মিলেমিশে করি কোলাকুলি।
অশ্রু আমি বন্ধু তোমার সকল ব্যথায় ব্যথী,
আমরা দুজন হংস মিথুন মহাকালের সাথী!