ওগো ললনা!
অমন ছলছল চোখে তুমি তাকিওনা।
দূর আকাশের তারার মত মিটিমিটি জ্বলে
কি যেন বলিতে চাও প্রতি পলে পলে।
পরিয়াছ অঙ্গে লাল টুকটুকে শাড়ি
আঁকাবাকা অঙ্গে তব তুফান উঠে ভারি।
কপালেতে পরিয়াছ একটি লাল টিপ
যেন আলোছায়া নিভু নিভু একটি প্রদ্বীপ।
খোঁপায় শোভা পায় একটি গোলাপ
তবু তোমার রূপ নিয়ে লিখবনা বিনয়ী সংলাপ।
আমি লিখব তার কথা
যার কঠিন শ্রমে তোমার বাজ্যিকতা।
তোমার প্রসাধনী পেয়েছ কোথায়?
কোমল পালংকে শুয়ে জ্বল কামনায়!
তোমার সুখের লাগি যারা দিল মাথার ঘাম
কতখানি শ্রম দিয়ে কত পেল দাম?
তোমার খাদ্যের যোগানদাতা ঐ হাড্ডিসার চাষা,
পথের ধারে খুপড়ি ঘর, যার সুখের বাসা।
তাকে তুমি ঘৃণা কর, বল ছোটজাত
বল রানী, তোমার পাতে কে দিয়েছে ভাত?
ক’বেলা অভুক্ত তবু ফলায় ক্ষেতে ধান!
তন্ত্রের জ্বালা মেটাতে গায় রাখালিয়া গান।
চেটেপুটে খয়ে তুমি সুখে নিদ্রা যাও,
ওদের ক্ষুদার যন্ত্রণা কি তুমি শুনতে পাও?
বড় বিক্ষুব্ধ আমার মন;
কি করে ঘোচাবে বল এতো ব্যবধান?
তোমার বাড়ীর ছেলেপুলে পাঠশালাতে পড়ে,
আমার ছেলে কংকালসার পেটের পীড়ায় মরে।
কুড়িতে বুড়ি হল মোর কিষানী মা,
পঞ্চাশেও অঙ্গে তোমার যৌবন জ্বালা!
কার রক্ত চুষে তুমি হৃষ্টপুষ্ট হও
আহা! তোমার এত তৃষ্ণা কি করে মিটাও?
তোমার ঘরে বিলাতী কুকুর পালংকে ঘুমায়!
কাজের বেটির জায়গা হল রান্না ঘরের কোনায়?
মশার সাথে সারারাত করেছে লড়াই,
কিসের অহংকারে সেই তুমি করেছ বড়াই?
তুমি সাম্যের কথা বল?
সমান্তরাল পথে তুমি তোমার পথে চল।