আর ঘুমাসনে খোকা, জেগে ওঠ।
কেন অবেলায় মুখ লুকিয়ে পরে আছিস?
কিসের লজ্জা তোর? কেন এতো ভয়?


তুই কি নিজের অক্ষমতাকে আড়াল করতে
আরও গুটিয়ে গেলি, হতভাগা?  
দোহাই লাগে আঁখি খুলে তাকা-
শোন কিছু কথা,
কষ্টের ফল্গুধারা বুকে চেপে
স্বপ্নহারা নিঃস্ব এই অভাগির আর্তনাদ!!
তোকে শুনতেই হবে।


বেয়াল্লিশ বছরের বলতে না পারা কষ্টগুলো
অস্ফুট শব্দ হয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে যাবার ইতিকথা
প্রাণ খুলে কাঁদতে না পারার বেদনা
সব কিছু আজ কথার সুনামি হয়ে বেরিয়ে আসছে।
চোখ মেলে চেয়ে দেখ নিষ্কর্মা কুলাঙ্গার, আমার!!!
তোর জন্মের পথটা আজ বেজায় লণ্ডভণ্ড
ওখানে ভিনদেশি ফিরিঙ্গীর বাধাহীন রতি উৎসব
ওদের সঙ্গ দেয় আমারই জঠরে  বেড়ে ওঠা  কুলাঙ্গার  
সুযোগ সন্ধানী দানবেরা ছিন্নভিন্ন করে
তোর পিপাসায় তৃষা মেটানো স্তনগ্রন্থি।
এখনও তুই চুপ করে থাকবি?
রাজনেতার মুখোশ  পরা ওই হারামিরা
আমার পান্তা ভাতের থালা কেড়ে নেয়
সাম্প্রদায়িক শুয়োর গুলো
তোর মায়ের  মোটা কাপড়ের লজ্জা আবরণ
আগুনে পুড়ে  জয়োল্লাস করে।
শেয়াল শকুনেরা আমার দেহটাকে কুড়ে কুড়ে খায়
আজও মুখ লুকিয়ে থাকিস তুই?
কেন কার ইশারায়?
তুইও ওদের মতো হায়ানা হয়ে গেলি নাতো?
যদি তাই না হয়
খুদিরামের চেতনা নিয়ে জেগে ওঠ
সূর্যসেনের মত ছুটে চল
তিতুমিরের মত সংগঠিত হয়ে
শাহাবাগের মতো গর্জে ওঠ।
শেখ মুজিবের  ভাষণের প্রতিধ্বনি  হয়ে
ছড়িয়ে পর টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া।
ভাসানির সততা নিয়ে স্পর্শ কর
মমতা জড়ানো শ্যামল মাটি।
পরাজিত কর ওই হিংস্র দানব পাক প্রেতাত্মা
আর ধ্বংস ওদের নিরাপদ আশ্রয়!  
ঘৃনার আগুনে পুড়িয়ে দে এই কলুষিত দেশপ্রেম।


শুধু তোর জন্য বুকের অতলে লুকিয়ে রেখেছি
অজস্র মনি কাঞ্চন,
তোর জন্যই আমার মায়া জড়ানো আঁচল ছায়া
তোর কথা বলার স্বাধীনতার জন্য
আমার সালাম বরকতেরা জীবন বিলিয়ে দিল
তোকে নিরাপদ রাখবে বলে হারিয়ে গেল তিরিশ লক্ষ্য প্রাণ।
তোর অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমার নূর হোসেন চলে গেছে অবেলায়!
কত আর্তনাদ বাতাসে ভাসে
কত বেদনা বুকে লুকিয়ে রেখেছি, খোকা!!


আজ আমার অস্তিত্বের সংকটে
তোকেই জাগতে হবে, মানিক।
জেগে ওঠ বিপ্লব বুকে নিয়ে
জেগে ওঠ রণহুংকারে
বিদ্রোহ কর রক্ত খেকো হায়ানার বিরুদ্ধে!
ছিঁড়ে ফেল সব অনিয়মের জিঞ্জির।
মাটিতে পুতে ফেল
ওই মানবী দানবী রাক্ষসী আর অন্ধকারের ডাইনী।
গলা টিপে মেরে ফেল যত বিষাক্ত কালনাগিনী!!