কবি বজলুর রশীদ চৌধুরী সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার অন্তর্গত মীরপুর ইউনিয়নের আমড়ার তৈল গ্রামে এক মুসলমান সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৫০ ইং ৩রা আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁহার পিতার নাম মরহুম সানাওর আলী চৌধুরী মাতার নাম মরহুমা সামছুন নেছা চৌধূরী পিতামহ মরহুম আজহর আলী চৌধুরী। কবির পিতা ছিলেন শিক্ষক। পিতামহ ছিলেন ফার্সী ভাষায় পন্ডিত। তিনি তৎকালে ভারতের শিলং কলেজে শিক্ষকতা করিতেন।
কবির বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে কবি ছিলেন দ্বিতীয়। কবির মা এতিম তিন সন্তানকে নিয়ে সংসারের হাল ধরেন এবং বহু কষ্টে তাদের লেখা পড়া চালিয়ে যান।
কবি গ্রামের পাঠশালা হইতে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন। তৎপর সিলেটের এতিম স্কুলে সপ্তমশ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করে পরবর্তীতে নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়েন। ১৯৬৮ সালে কবি মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এম সি কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালে বি.এ সম্মান (বাংলা) পাশ করেন। তৎপর কয়েক বছর বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ২০০৩ সালে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হিসাবে মিশিগান অঙ্গরাজ্যে বসবাস করিতেছেন। কবি ‘মসজিদ’ ‘স্বপ্নের সাধু’ ‘মহাসৃষ্টি’ ‘মা’ ‘পথিক’ ‘বাংলার বার মাস’ ‘আমার পাঠশালা’ ‘আমার গ্রাম’ ‘বারুণী’ ‘মাঝি’ ‘পল্লীবধূ’ ‘শ্যামল’ ‘বাংলা ঈদ’ ‘বিজয়ের মাস’ সহ অসংখ্য কবিতা রচনা করে পাঠকদের মন জয় করেন। তাঁর প্রত্যেকটি কবিতায় বাস্তব চিত্র তুলে ধরে পাঠকদের আকৃষ্ট করেন। সহজ ভাষায় কবিতাগুলো সকল শ্রেণির পাঠকদের মুগ্ধ করে। ছন্দবিশারদ, ছন্দের কারিগর, মানুষ ও প্রকৃতির ভালোবাসা তাঁর কবিতার ছন্দে এমনভাবে মিলিয়ে দিয়েছেন যেন পাঠককে সেই পরিবেশে টেনে নিয়ে যায়। তাঁর ছন্দোবদ্ধ কবিতার ধ্বনি ও মাত্রায় সুষম সৃষ্টি পারিপাঠ্য যাহা পাঠকদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম। তাঁহার কবিতাগুলো দেশে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা জাতীয় পত্রিকা প্রবাসে বাংলা পত্রিকা সমূহে নিয়মিত প্রকাশ হয়। বিভিন্ন প্রকাশনা ও তাদের বিভিন্ন সংকলনে প্রকাশ করছে। তাঁর মহাসৃষ্টি কবিতা পবিত্র কোরআন ও বিজ্ঞানের সমন্বয় ঘটাতে তাহা ইংরেজী ভাষায় ভাষান্তর হয়েছে। বাংলা একাডেমিও তাঁর কবিতা প্রকাশে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে কবির সাথে যখন পরিচিত হই তখন তাঁর মধ্যে কাব্য প্রতিভার সন্ধান পাই। তিনি তাঁর অতীতের কাব্য চর্চা নিয়ে আলাপ করাতে আমি তাঁকে কাব্য চর্চায় পুনরায় উৎসাহ দিতে থাকি এবং সহযোগিতা করি। আমার ধারণা ও বিশ্বাস সঠিক হয়েছে। গতবছর অন্যধারা প্রকাশনায় ‘এসো হে বৈশাখ” উপলক্ষে লেখকের একটি কবিতা প্রকাশনা হয়। ২০১৫ বইমেলায় আমার লেখা কবিতা বই প্রকাশ করা হইয়েছে।
তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই কবিতা লিখে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন। আমি তাঁর সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
-লেখক।