যেন এক যাযাবর আত্মা, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছি নিঃসঙ্গতার মরুপ্রান্তরে।
নেই কোনো বন্ধুর হাত, নেই কোনো রক্তের বাঁধন শুধু এক শূন্যতার অসীম বিস্তার।
কখনো ভাবি, আমি কি সেই হারিয়ে যাওয়া সেনানী, যে অতীতের কোনো যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষে দাঁড়িয়ে আছে একা?
নাকি সেই পথিক, যে রাজপথের ধুলোয় পা রেখে খুঁজে ফিরছে হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়তার স্বরলিপি?

প্রাচীন নগরীর ধূলি জমেছে আমার হৃদয়ে,
যেখানে একসময়ে প্রাসাদ ছিল, এখন কেবল নীরবতার রাজত্ব।
একটি কাঁধ চাই, যেখানে ক্লান্তি নিক্ষেপ করা যায়,
একটি কণ্ঠ চাই, যে বলবে "আমি আছি, ভেবো না একাকী তুমি।"

প্রেমিকাকে ডাকিনি কখনো, কারণ জানি, সে-ও হয়তো কেবল মরীচিকা।
পরিবারের দেয়ালে আমার প্রতিচ্ছবি ধূসর হয়ে গেছে,
ভ্রাতার হাতের উষ্ণতা যেন হারিয়ে গেছে সময়ের অতলে।
একটি স্নেহময়ী বোন চাই, যে নির্ভীক বর্ম হয়ে দাঁড়াবে আমার সামনে,
যার স্নেহের ছায়ায় আমি ফিরে পাবো সেই হারানো বিকেল।

ওহে মহাকালের প্রতিধ্বনি!
তুমি কি শুনতে পাও আমার আকুল প্রার্থনা?
তুমি কি দেখেছো আমাকে এই ইতিহাসের ধুলোয় ঢাকা এক নিঃসঙ্গ সৈনিককে?
তোমার প্রাচীন শিলালিপিতে কি লেখা নেই,
যে একদিন কেউ এসে বলবে—"আমি তোমার আপন"?

যদি নাও আসে কেউ, তবুও আমি অপেক্ষায় থাকবো,
যেমন প্রাচীন সভ্যতা অপেক্ষা করে ইতিহাসবিদের স্নেহস্পর্শের জন্য।
হয়তো একদিন, কোনো নিঃসঙ্গ পথিক এসে বলবে
"তুমি একা নও, আমিও তোমারই মতো হারিয়ে গিয়েছিলাম।"