তখন আমি সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি,
বাড়ীতে আসিলেন এক গুরু।
জ্যেঠি, দিদি ঠাকরুণ আরো অনেকে তখন
প্রণাম করিল শুরু।


ছোট বলেই যত সব অবহেলা
সবার শেষে আসিল আমার পালা।


গুরুর চরণ ছুঁয়ে
ভক্তি গদো গদো হয়ে
বলিলাম, বাবা আমায় করুন আশীর্বাদ।
গুরু কহিলেন-
ছোটে সাব,
বল তো কি হতে চাও, কি তোমার মনের সাধ?


পড়িলাম বিড়ম্বনায়।
সাধ তো অনেক,
বড় হইতে কেবা নাহি চায়।


বলিলেন গুরু, তুমি বড় হও সমুদ্রসম ।
বলিলাম আমি,
এ তো কেবল নষ্টামি।
চমকিয়া উঠিলেন গুরু, কহিলেন-
হইল ইহা কেমন কথা?
বলিলাম, সমুদ্র কেবল পাথাল শয়ানে বাড়ে
উঁচু নয় তার মাথা।
শুনে গুরু বলেন, ছোটে সাব
বুদ্ধিতে তুমি বড়ই পাকা।
তাইতো বটে, সমুদ্রটা যে দেখা যায় বড় ফাঁকা!


বলিলেন এবার গুরু
কন্ঠে আনিয়া মধুর রব,
হয়ে যাও তুমি অনন্ত আকাশ।
বলিলাম আমি
সেবন করিয়া বায়ু এক রাশ-
আকাশটা, সে তো বড়, কিন্তু বিস্তর যে ফাঁকা।
কোথায় থাকে, কোন্‌ দিকে থাকে
নাহি তার কোনো মাথা।


হাঁকিলেন গুরু, ওহে পুঁচকে ধন
তুমি যে জ্ঞানের সাগর।
তোমার নামই হোক না কেবল সকাল, সন্ধ্যা, ভোর।
তাই তুমি হইয়া যাও অতিশ দ্বীপংকর।


বলিলাম আমি-
ওগো আর্শীবাদের স্বামি।
আমি তো হতে চাই সেবকের প্রতীক,
তবে নয় কেন বাংলাদেশের বড়-সড় এক রাজনীতিক?


কাষ্ঠাসন হতে গুরু
এবার নামা করিলেন শুরু।
বলিলেন, ছোট বাবু, বয়স তোমার কাঁচা।
বুঝিয়া বল কথা,
অন্যথায় জীবন হইবে তোমার বৃথা।


বলিলাম, ইহা তো কাঁচা পাকার কথা নয়।
করুন গুরু আশীর্বাদ আমায়, হইয়া নির্ভয়।


তখন গুরু
মস্তকে আমার রাখিলেন অশীর্বাদের হাত,
এবং বলিলেন বিশুদ্ধ উচ্চারণের সাথ-
দিনে তুমি নিবিষ্ঠ মনে করিও প্রজাপালন।
নামিলে নিশিত, করিও(না) প্রজা সম্পদ হরণ।


হ-য-ব-র-ল-৪