জেগে থাকে জনতার হাত
কখনও মুষ্ঠিবদ্ধ খাড়া,
কখনও শ্লোগানের তরবারির মত
খাড়া কিন্তু খাপ খোলা;
আবার কখনও ঝাকুনি আর দোলায় কম্পমান
কী এক প্রতীজ্ঞায়।
মুখের তীব্র শব্দ শ্রোতের সাথে
আজন্ম মিল রেখে,
উত্থান আর বিক্ষেপন হয় এই হাতগুলোর।
ঠিক যেমন শিল্প কারখানার মেশিনের চাকা
ঘুরে চলে সময়ের সাথে মিল রেখে।
হাতগুলো দশ কিংবা বিশ,
কিংবা শতেক, কিংবা সহস্র।
উৎক্ষিপ্ত হয়,
উদ্ভাসিত হয়,
বুনো বতাসে নড়ে ওঠা বৃক্ষের শীরের মত।
কখনও বঙ্গ, কখনও নিহংগ
কখনও চৈনিক আবার কখনও ইংরেজি
ভাষার মত শতেক ভাষার সাথে মিল রেখে
দোলিত হয় হাতের মিছিল।
নড়ে উঠে হাত,
ধ্বসে পড়ে ভীত
কত বুর্জুয়া, কত পিড়ন শাসকের কাঁচের দুর্গের।
যুগ আসে,
যুগ যায়
জনতার মুষ্ঠিবদ্ধ হাত জেগে থাকে মশালের মত।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত
শিকাগো, সানফ্রান্সিসকো ঘুরে
চলে আসে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে।
কখনও পহেলা মে হয়ে,
কখনও বাহান্ন, ঊনসত্তুর
আবার কখনও বা একাত্তর হয়ে।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত খাড়া হয়
একুশের শহীদ মিনারের মত,
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত খাড়া হয়
বাহাদুর শাহ্‌ পার্কের স্তম্ভের মত।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত খাড়া হয়
মসজিদের মিনারের মত,
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত খাড়া হয়
তাল, শাল কিংবা গজারি বৃক্ষের ন্যায়।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের ভাষাতে ভাসে
মানুষের সংক্ষুদ্ধ ক্ষোভ,
ভাসে মিলিটারির তাজা গুলি,
কিংবা বেয়োনেটের উদ্ধত্যকে
গুঁড়িয়ে দেবার অংগিকার।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত কেবলি হাত নয়,
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত কোনো উদ্ধত ভংগিও নয়।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত কখনও নারীবাদি,
কখনও প্রতিবাদী,
কখনও তৌহিদিবাদি,
কখনও সাম্যবাদি
এবং
কখনও বা সম্রাজ্য বিরোধী
কখনও বা শাসক বিরোধী,
কখনও স্বৈরাচার বিরোধী,
আবার কখনও বা সামরিক সাশন বিরোধী।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত কখনও কলম,
কখনও নাংগা তরবারি,
কখনও কণ্ঠবাদি।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত কখনও খাড়া থাকে সারা দিন,
কখনও সারা রাত,
কখনও বা অষ্ট প্রহর।
জনতার মুষ্ঠিবদ্ধ হাত বেঁচে থাকে আসমুদ্র সময়ের জলে।


হ-য-ব-র-ল-৬