সেই মেয়েটি, সেই সুনয়না মেয়েটি
যে ছিল পাশের বাড়িতে,
অবিভাবকের চাবুক চোখের লাল পেড়ে আঁখি
আমার থেকে দূর করে রেখেছিল তাকে।
দিনে দিনে তার ডাগর আঁখি
হতেছিল ডাগর থেকে ডাগর,
দূর থেকে সেই পদ্ম নয়ন দেখে
কেটে চলেছিল আমার সন্ধ্যা দুপুর ভোর।
একে একে সেই চোখের বেড়ে গেল জ্যোতি
কত রন্ধ্র পথে, কত দেয়ালের ফাঁকে
হরিণী নয়নের সব চপলতা
ছড়ালো তার নীরব আকুতি।
আমার নয়নে তখন ভরা ভাদরের শ্রাবন,
এই আসে এই যায়, চলে জলের কেলন।
ভেবে চলি বেহায়া জগৎ
এতই কি তুই নিঠুর?
শাসকের হাতে রেখে বেত,
কারো নীল চোখে রেখেছিস ঢেলে
উজাড় করে সব পদ্ম মধুর।
কারো নীল চোখে ছেড়েছিস তুই
শংখ নীলের যত সব কলা,
কারো হাতে দিয়ে মরণ খড়্গো
কেটে নিতে চাস অন্যের গলা।
এল এক দিন, সেই এক ক্ষণ
দেখি ডাগর নয়না আমার,
পাশের বাড়ি ছেড়ে
তল্পি সমতে করছে গমন।
পাল ছেঁড়া, ঢেউ ভাংগা রণ তরী আমি
ছাদের উপরে চললাম ছুটে।
বললাম, আজ অমি ভাংব শিকল
যদিও ভাগ্যে আমার বেতের প্রহার জোটে।
ভেংগে বাধার বৃন্ধাচল বললাম আমি তাকে,
এই কি তবে শেষ?
আধো ভাংগা ঠোঁটে, আধো ভেজা চোখে বলল সে,
তুমিতো থাকবে হয়ে আমার পদ্ম চোখের রেশ।