ডলফিন একবার উঠালো তার মুখ পানি থেকে।
দেখলো, আমরা, মানুষরা কি করি।
কি দেখলো সে?
না, তেমন কিছুই নয়।
দ্বিতীয়বার, সে উঠালো তার মুখ। মানুষ এল তাকে সোহাগ করার জন্য,
জীবনটা হলো তার ধন্য।
তৃতীয়বার, পানি থেকে মুখ তুলতেই, এ কি! হলো বিকট শব্দ।
কেঁপে গেল তার প্রাণ, রক্তের কনিকায় কনিকা ভেঙ্গে হলো খান্‌ খান্‌।
পরমাণু বোমায় জ্বলে, দাহের চিতায় শুয়ে পড়লো জাপান।
চতুর্থবার, ডলফিন পানি থেকে তুললো তার মুখ।
যুদ্ধ নেই আছে মন্দা, আছে মানুষের বেঁচে থাকার ধান্দা।
পৃথিবী হয়েছে ফিকে বিবর্ণ,
মানুষের দেহের অলিন্দ, রোগে শোকে তাই জরাজীর্ণ।
পঞ্চমবার, ডলফিন দেখে পৃথিবীর শীতল ভাব।
ভাবলো সে এ হয়ত প্রাকৃতিক খেলা,
দুনিয়াটা তাই হচ্ছে শীতল এ বেলা ও বেলা।
শীতে হীমায়িত হল সে খুব, তারপর পানির তলায় দিল ডুব।
ষষ্ঠবার, ডলফিন দেখে অবাক বিস্ময়ে,
তার পাখা আর লেজে সাবমেরিণ ঘোরে পানির নিঃসীমে।
উঠালো সে পানি থেকে মুখ, মানব কীটেরা ভুলে জীবনের সুখ,
রয়েছে মারানস্ত্র বানানোর তালে, এখন পৃথিবী তাই বেহালে।
ভাবলো সে এসব হয়ত যুদ্ধ বাধাবার পায়তারা,
পৃথিবী হয়ত হবে শূন্য, হবে মানব হারা।
সপ্তমবার, ডলফিন তুললো আবার মুখ,
ভেঙ্গেছে পৃথিবীর এক অংশ, অন্য অংশ তাই নিয়েছে পৃথিবীর
সাশন ভার, তালুকটা যে তার তাই সে চলছে দুর্বার।
অষ্টমবার, ডলফিন দেখে, ইরাক জ্বলছে, লিবিয়া জ্বলছে,
জ্বলছে আফগানিস্তান।
ড্রোনের হামলায় মরছে মানব, রোদনে ফেটে ক্ষত-বিক্ষত পাকিস্তান।
নবমবার, বেচারা ডলফিন এবার ক্ষুদ্ধ চোখে দুনিয়াটা দেখে,
দেখে আর বলে, পৃথিবীটা যদি এভাবে চলে,
তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ হবে অবধারিত, আর পৃথিবী পড়ে রবে
ধূসর মরুভূমির মত, হয়ে ক্ষত-বিক্ষত।


হ-য-ব-র-ল-২৬