[এবার এরা দু’জন আপন আপন দলের মাঝে মিশে যায়। এই ফাঁকে বরের দল থেকে নতুন এক জন বর এবং কনে পক্ষ থেকে একটি সুন্দরী মেয়ে বধু বেশে আবির্ভাব হয়। বরের হাতে মদের বোতল। কনের হাতে ঝাড়ু। তার পরনে শাড়ি ঝাড়ুদারণীর ঢঙ্গে পরা। ]


বরঃ কুনঠে গেলি ছেট্‌কির মা
  তু ঘরত ক্যানে নাই,
  বাদ্য খানা বাজে ক্যামন
  তু দেখলে বাহার আয়।
  কার ঝিয়ারি করছে বিয়া
  ম্যালা ঢাকের বাড়ি,
  উটের লগে ঘরৎ ঘরৎ
  চলছে টমটম গাড়ি।


কনেঃ শালার মিনষে মদের বোতল
  তোর হাতত ক্যানে ধরা,
  পাঁঠার লাহান প্যাঁ প্যাঁ করস
  বাড়ি খানা মালের গন্ধে ভরা।
  চ্যালা মদের মাল খাইয়া তোর
  কানে বাজে সুর,
  কানের ছ্যাঁদায় হে রাম তোর!      
  ফাল পাড়ে ইঁদুর।
  দিনের ব্যালায় কুথা রে তুই
  শুনলি ঢাকের বাড়ি?
  চোখের ছ্যাঁদায় দেখলি রে তুই
  এমুন ঘোড়ার গাড়ি?
  
বরঃ অারে ও ছেট্‌কির মা
  তোর ব্যাপার খানা কি,
  সান্নিপাতের ব্যারামে তোর
  চোখ কান গেল নাকি?
  দ্যাখনা ক্যানে বাহারে তু
  একশ’ ড্যাকরা ছেরি,
  ক্যামন সাজে ছেঁই ছেঁই কইরা
  হাঁটছে রাস্তা ধরি।
  উধারে দেখ একশ’ মরদ
  টোপর মাথায় দিয়া,
  আরে ও ছেট্‌কির মা, কাঁহারে তু,
  বলনা কাহার বিয়া?
  রাজ রাজুড়ার বিহা নাকি
  এতই ক্যানে লোক,
  লে শালা, বোতল খানা কই গেলরে
  গলাটাতে ঢালব কয়াক ঢোক।   


কনেঃ আরে ও ধাঙ্গড় শালা চিক্কর পাড়স
  কাটেক লাই তোর নেশা,
  বাড়ির ভিটায় বকরির নাদি
  তু দিসনে তথায় ঘেঁষা।
  দেওড়ির সামনে ব্যাঁতের বন
  দেইখ্যা ব্যাঁতের ড্যাগা,
  মনে লয় তোর বিয়ার মানুষ
  চলছে এ্যাঁকা ব্যাঁকা।
  
  [ এবার ঝাড়ু- উঁচিয়ে ]


মা দুগ্‌গা হামার এই
মরদ খানা লিয়া,
ঘরত আমার শান্তি নাই রে
তু, থাকলি কাঁহা গিয়া।
ব্যাঁতের গাছরে কহে মিনষা
বিয়ার লোক জন,
গাছের পাতার অওয়াজরে কয়
ঢাক ঢোলের বাদন।
খাড়া খাড়া একটু খাড়া
হামি আইতাছে বাহার,
বিহা খানা তোরই নাকি
হইতেছে কাহার।


[কনে এবার বরকে ধরে দুই জমিদারের লোক জনের দিকে অবাক হয়ে চাইতে থাকে। তারপর আশ্চর্য হয়ে বলেঃ]


আরে ও ছেট্‌কির বাপ
কান্ড খানা কি রে?
হাচাই এখন দেখি তোরে  
তু কত্ত মাইনষের ভিড়ে।
ইধার উধার কত্ত যে লোক  
করছে কেমন মজা,
শাদি না কিরে? আরে ও ছেট্‌কির বাপ
খায় যে তারা নাড়ু চিড়া গজা।
আরে, ও হামার দামড়া মরদ
আছিস ক্যানরে খাড়া,
কালা বান্দরের ল্যাজা তুলে
তু মাইনষের ভিড়ে দৌড়া।


[ এই বলে এরা দু’জন আবার দৌড়ে গিয়ে মানুষের মধ্যে মিশে যায়। এ সময় নানা রকম বাজনা বাজতে থাকে। এরপর দুই পক্ষের লোক জন তাদের সাথে আনা পাকুড় ও বট গাছের সাজানো ডাল দু’টিকে রাস্তার ধারে মাটিতে পুতে দেয়। এরপর সেখানে দৈ চিড়া, নারিকেলের নাড়ু এবং অন্যান্য খাবার খেয়ে যে যার পথে আনন্দ করতে করতে বিদেয় হয়।]


                             -শেষ-