বলিয়াছিল কেউ যেন বিড়াল মারিতে হয়
বাসর রাতে,
পাড়ার দুষ্টু ছেলেরা সেই হ’তে
রহিল ভীষণ মেতে।
হঠাৎ তাহাদেরই এক বন্ধুর হইল
বিয়ের আয়োজন,
দুষ্টের ধাড়িরা সব করিল পরামর্শ
বিড়াল মারাটা প্রয়োজন।
ওদিকে তখন বরের মনেও চলিতেছে
একই কথা,
না মারিলে বিড়াল বাসর রাত্রিটা
যাইবে যে ফাঁকা।
বিড়াল! বিড়াল! বিড়াল! শুধু যেন
বিড়ালের খেলা,
বিড়াল চিন্তায় উঠিল জমিয়া
বাসর রাত্রির খেলা।
বন্ধুরা সব আনিল খুঁজিয়া ইয়া বড়
এক হুলো,
চোক্ষু দুইটি হলুদ তাহার
গায়ের রঙ্গটি যম কালো।
রাত নিজ্‌ঝুম বর ভাবিতেছে
তাহার মনে,
এই তো সময় বিড়াল মারিবার
সারিতে হইবে কাজ এক্ষণে।
নব বধুরে তাহার এই নিশা মাঝে
করিতে হইবে জব্দ,
দিবা ভাগে এই নিয়ে গবেষণা শেষ
এখন তাই সে নিস্তবদ্ধ।
কিন্তু একি! হঠাৎ হইল উদয়  
বন্ধুদের সেই বিড়ালের পো,
করিতে লাগিল খাটের উপর নিচ
ধরিবার নাহি যো।
গোস্বা হইয়া কহিল বর-
হুলোরে তুই পিঠে বাঁধ্‌ কুলো,
ধরিতে পারিলে আজ তোরে  
পিষিয়া করিব ধুলো।
বিড়াল ধরিতে রাগতঃ বর  
নামিল খাটের নিচে,
বধুটি রহিল খাটের উপর
দাঁতে দাঁত খিঁচে।
উঠিল বিড়াল খাটের উপর
দিয়ে বেমক্কা এক লাফ,
কনে ছুটিল খাটের নিচে
কহিল বাপরে বাপ!
এবার আসিল বর খাটের উপর;
বিড়াল ছুটিল নিচে,
কাঁদিয়া উঠিয়া কহিল বধু-
দুষ্ট হুলো, ছুটিস কেন মোর পিছে?
কহিল বর, এ যে ভীষণ ল্যাঠা!
ছুটিল সে পুনঃ খাটের নিচে,
হুলো বেটাও ধাড়ি মাস্তান
সেও ছুটিল বধুর দিকে।
এমনি করিয়া বিড়ালে মানুষে চলিল যুদ্ধ;                        
পোহাইল মধু রাতি,
বুঝিল শেষে পাড়ার আড্ডাপ্রিয় বর
বিড়াল মারাটা কী!

রম্য-৫


মোঃ মজিবুর রহমান
উত্তরা, ঢাকা।