আজ পূর্ণিমার রাত ,
দেখি একা আকাশের দিকে
আজ কেউ আর ডাকেনি
চাঁদের আলো গায়ে মাখতে ,
উঠানে দক্ষিণা হাওয়ায়
দুলে দুলে উঠছে কসমস ফুল গুলো ,
সাদা কসমস গুলো জ্যোত্স্না মেখে
তাকিয়ে আছে নীল আর
গোলাপী গুলোর দিকে ,
জিনিয়ার গাছগুলো বেশি বড়ো নয় ,
ওরা সোজা ঘাড় তাক করে
বোধয় চাঁদের বুকের ক্ষত গুলো কে
দেখে চলেছে , ওদের হাত থাকলে
হয়তো হাত বুলিয়ে দিতো -
চন্দ্রমল্লিকা এখনো কুঁড়ি
ফোটার সময় হয়ে এলো ,
তাই সাদা রসিক গোলাপ টা
ভয়ে ভয়ে আছে , চন্দ্র মল্লিকা আগের
মতো আবার কাছে আসবে ,
ভালবাসবে ,তারপর কোন এক
হলুদ গাঁদাকে বিয়ে করে নেবে
এমনই এক জ্যোত্স্না রাতে ,
ওদের তখন সাজবে বাসর
সবাই আসবে নিমন্ত্রণে ,
রসিক গোলাপ একাই শুধু
মল্লিকার স্মৃতি নিয়ে
রাত জাগবে একা একা -
ডালিয়া ও একবার রসিকের
প্রেমে পড়ে হাবুডুবু খেয়েছে ,
সুখেই কেটে ছিল কটাদিন ,
কিন্তু কেউ তাদের সখ্যতা
মেনে নেয়নি তাই হিংসে করে
নখের আঘাতে ছিঁড়ে নিয়ে
গেছে ডালিয়া কে বৃন্ত থেকে !
সেদিন ওরা খুবই কেঁদেছিল ---
আজ ও রসিক একা
সারাদিন তাকিয়ে থেকে সবাইকে
চেয়ে চেয়ে দেখে , সবার সুখ দেখে
নিজেও সুখী হয় ,
ও আজ একা চাঁদকে দেখছে ,
আমি ও দেখছি ---
একটা রাত ছিল যখন
চাঁদ দেখার জন্য ডাক আসতো
শতাধিক সিঁড়ি ভেঙ্গে
ছাদের উপরে গিয়ে দাঁড়াতাম
সে ও তার বাড়ির ছাদে
চিলে কোঠায় হেলান দিয়ে
তাকিয়ে থাকত আকাশের দিকে
মুঠোফোনে রসালাপ ক্রমে
গভীর থেকে গভীরে এগিয়ে যেত ,
চাঁদ কে নিয়ে কতো গান গাইতো ,
আমিও গেয়ে যেতাম যতক্ষণ
ঝুলি শেষ না হয়ে যেত ,
তারপর শুরু হতো চাঁদের
সাথে প্রেমিকার মুখ ,
কতো তুলনা ,অলংকার
উপমায় ,লজ্জায় ভোরে যেত তার মুখ
পরিশেষে কবিতার ছলে
কতো কথা , সব চাঁদের পানে তাকিয়ে
তবু ভুলে যেতাম উভয়েই
চাঁদ আছে কিনা আকাশে !
আত্মারতিতে  নিমগ্ন হয়ে
দেখতাম চাঁদের মাঝেই তাকে ,
যেন আকাশে এক উজ্জ্বল
আরশি ঝোলানো ,আর তাতেই
প্রতিফলিত হয়ে ভেসে উঠছে তার মুখ
বহুদূর থেকে এভাবেই দেখা হয়েছিল
সেই রাতে ,
আর তার কোন সাড়া নেই
আজ সে ডাকেনি ,তবু এসেছি
আজ আর দেখিনা তাকে ,
আজ আর ডাকেনা আমাকে ---!