নিকষ কালো আঁধার জগতের অগ্রপথিক জোনাকি
ছোটবেলা থেকেই ভীষণ প্রিয় ছিল আমার।
অবাক চোখে উপভোগ করতাম আঁধার ও জোনাকির সখ্যতা
মুগ্ধতায় হারিয়ে যেতাম আমি।
মিশে যেতাম প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের মোহে
কৈশোরের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে আঁধার ও জোনাকির খেলার সাথে।
কল্পনাতেও মিশে থাকতো ওদের খুনসুটির গল্প।
নিশিত রাতে জোনাকির আলো উদ্ধুদ্ধ করতো আমাকে
চাইতাম জোনাকির মতো হয়ে সবার মাঝে আলো ছড়াতে।
জীবনের শুরুটাও ছিল মুখরিত।
সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায় জড়িয়ে ছিলাম সবার অস্তিত্বে
ছিল আলোকিত ভূবণ আমার।
সর্বদা সবার জন্য ছিলাম নিবেদিত প্রাণ
ছিল উদারতায় ভরা আমার হৃদয়।
অথচ সেই আমি আজ ছিন্নভিন্ন, পথিক অগোছালো জীবন ধারার
অন্যের মাঝে সুখ খুঁজে ফেরা এই আমি
জীবনচক্রে মহত্বের ধাপ পেরিয়ে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখে দাঁড়িয়ে এখন
সবকিছু গুটিয়ে হয়েছি জড়সড়।
অন্ধকার শেষে আলোর মাঝে যেমন জোনাকি বিলীন হয়ে যায়
আমিও আজ হারিয়ে গিয়েছি আলোর জগৎ থেকে।
জীবনের সব দ্যুতি ছড়িয়ে নিমজ্জিত এখন হতাশার সাগরে
পরোপকারী মন আজ প্রায় মৃত
বিলুপ্তির পথে মনুষ্যত্বের কারিগর।
ক'দিন আগেও এই মনুষ্যত্বের অস্ত্র ছাড়া কিছুই ছিল না আমার
সেই অস্ত্রের ব্যবহারও করেছি সাধ্যমত।
অথচ প্রকৃতির নানা ঘাত-প্রতিঘাতে সেই অস্ত্র ভোঁতা হয়ে গিয়েছে আজ
মরিচা পরেছে মনুষ্যত্ব্বের গায়ে।
সময়ের ব্যবধানে পৃথিবীর বিরূপ আচরণ স্তব্ধ করে দিয়েছে আমাকে।
হতাশ হয়েছি খুব।
ক্রমে ক্রমে ক্ষীণ করেছি আপনার পরিধিকে
চার দেয়ালের মাঝে বন্দি জীবনে অভ্যস্ত করেছি নিজেকে।
ইচ্ছে ও আকাঙ্ক্ষাকে বুকে চাপা রেখে গড়েছি অভিমানের পাহাড়।
চারপাশের ব্যস্ত মানুষের কলরবে দম বন্ধ হয়ে আসে এখন
বড্ড ভয় পাই এখন জনারণ্যকে।
জোনাকির আলোর ন্যায় কুজ্ঝটিকাচ্ছন্ন জীবন আমার পায়নি পূর্ণতা
বিষন্নতার ভারে আটকে গিয়েছে জীবন গাড়ি আমার
আপন সত্ত্বাকে বিলীন করে হয়েছি আজ একাকিত্বের রাজকুমার।