অন্তর দহন
মাজহারুল মোর্শেদ

অন্তরে অন্তহীন বেদনা ডুকরে কাঁদে
তপ্ত বাতাসে ভাসে অসহায় মানুষের দীর্ঘশ্বাস,
সর্বনাশী প্রেতাত্মাগুলো স্নায়ুতন্ত্রে বাঁধে বাসা
অস্বচ্ছ পথে মাকড়শারা জাল বুনে বারোমাস।

আমার স্বচ্ছ ভাবনাগুলো ম্লান হয়ে যায়
যখন দেখি, মানুষগুলো সব অমানুষ হয়ে যায়
যখন দেখি, মানুষ কেবল মানুষকেই ভয় পায়
যখন দেখি, মানুষ কেবল মানুষকেই শত্রু ভাবে

আমার রক্ত কনিকাগুলো নিস্তেজ হয়ে যায়  
যখন দেখি, মানুষ-মানুষের মাথায় পিস্তল ধরে,
যখন দেখি, ছিন্নবাস অর্ধনগ্ন প্রাণহীনদেহ রাস্তা পড়ে থাকে
যখন দেখি, বেওয়ারিশ লাশ কুকুর-শিয়ালে টানাটানি করে।

আমার আশান্বিত স্বপ্নগুলো ক্রমশঃ ম্লান হয়ে যায়
যখন দেখি, সমাজ-রাষ্ট্রের নিয়মগুলো পচে যায়,
যখন দেখি, কাঁটাতারের বেড়ার ঝুলন্ত তরুণীর বিবস্ত্র দেহ
তখন আমার অন্তরে তীব্র যাতনাগুলো বক্ষবিদীর্ণ করে।

আমার অন্তর্লোকে তীব্র প্রদাহ দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে
যখন দেখি, ধর্ষিতা নারী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে কৃষ্ণচূঁড়ার ডালে ঝুলে,
যখন দেখি, বিচারের জন্য নিরাপরাধ দেহ চলে যায় লাশ কাটা ঘরে
যখন দেখি, প্রশাসনের নাকের ডগায় অপরাধীরা ঘুরে বেড়ায় বুক ফুলে।

নিদারুণ হাহাকারে-আমার কষ্ট আরও বেড়ে যায়
যখন দেখি, ছোট শিশুটি পিতৃতুল্য ধর্ষকের দ্বারা ধর্ষিত হয়,
যখন দেখি, নিস্পাপ শিশুটির ধর্ষিত লাস নর্দমায় পড়ে থাকে
যখন দেখি, বক্ষবিদীর্ণ সন্তানহারা জননী বারবার সজ্ঞাহীন হয়।

আমার ক্ষত-বিক্ষত অন্তর ডুকরে কেঁদে ওঠে-
যখন দেখি, রাষ্ট্রের অনিয়মগুলো সব নিয়ম হয়ে যায়,
যখন দেখি, সত্য-ন্যায় বিচারের বাণী ডুকরে ডুকরে কাঁদে
যখন দেখি, সুপ্ত দংশনের বিষে নিরপরাধ মানুষগুলো নীল হয়ে যায়।