ডাকঘরটা বন্ধ হয়ে গেছিল সেই অনেকদিন আগে
বোকাবাক্স ধূলো জমে ক্ষীর,
কাঁদাকাটি শুকিয়ে গুড়া হয়ে একপ্রলেপ আস্তরণে ঢেকে ফেলেছে আমার মন কথা!
সে অনেকদিন আগে প্রেমের বহুত্বে,
মনের বহ্নি দমাতে না পেরে কালির গাঢ়ত্বে কয়েকশ পৃষ্ঠা চিঠি সাহিত্যে স্নাতক শেষ করে ফেলেছিলাম,
আমি গেয়ো মানুষ! ডাকঘরটা বন্ধ হয়নি এখানে
সে থাকে সূদুর নীহারিকা পর্বতে ওখানে ঝলমলে আলো জ্বলে,
ডাকপিয়ন যায় না,বারণ আছে।


আমি ভাবছিলাম পর্ণাশন হয়ে গেছে ডাকপিয়ন!
নইলে উত্তর নেই কেন?
আসলে প্রাপক,কুম্ভকারেরে চক্রে ভ্রষ্ট হয়েছে।
জানা ছিলো না বলে, আমি চিঠি ভেষজে মনো নিপাত করে শুদ্ধস্বরে দক্ষিণা বচন আওড়াতাম;
কতো টুকরো লেখা চিবিয়ে চিবিয়ে ফেলে দিয়েছি, জানালা সাক্ষী!
আমি বাঁও তৈরী করে ধূনন গলায় পাঠ করা চিঠি,
তোমার ঠিকানায় অনবরত পাঠিয়েছি
শেষমেশ শুনলাম লেখাগুলো বিধবা হয়ে গেছে!


অনেকদিন পর ধূলোজমা বাক্সখানি খোলা হয়েছে
পৃথিবীর বুকে ডাকঘর বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে বলে!
কোথাও কেউ নেই;
পত্রের চাপে বোবা কাঠের বাক্সটা ফুলে উঠেছে,
কত লেখা! কত অনিদ্রা রাত পিত্তশূলকে!
ডাকপিয়ন বললো, এত চিঠি দেখেনি এ জন্মে।
মায়াবশত,কাঁধে বয়ে প্রাপকের ঠিকানায় দুবাহু উঁচু করে আছে এই ডাকপিয়ন।


বহুকালব্যাপী অপেক্ষমাণ প্রেরক দেখলো,
এক সরকারী পোশাক পরা বৃদ্ধ কান্না কন্ঠে গেঁয়ো দু'চালার ঘরে হাঁপাতে হাঁপাতে পায়ের কদম ফেললো;
ক্রন্দনরত হতবিহ্বল সে এই পত্রকথার মায়ায়,
যাহা উহ্য রয়ে গেল প্রাপকের ঠিকানায়।
শুনলাম,এসব পুরাতন জিনিস দামী আলমারিতে জায়গা হয় না,
নতুনত্ব পৃথ্বী তার!
এসব ছাইপাঁশ লেখকের পৃষোদ্যানে তার দম বন্ধ হয়ে আসে।


কি করবে প্রেরক,
মনবাক্সে বোকাবাক্স পুরে দিলো
শেষ হলো অপেক্ষা!
উন্মুক্ত গড়েরমাঠে চিৎকার করে অব্যক্ত ভবিষ্যৎ লেখা।





নিরিবিলি, নবীনগর
১২-৬-২০২০