তপ্ত উত্তপ্ত ফোঁটা পানির,প্রত্যেক গল্পে কষ্ট থাকে।
এক অবচেতন ঠান্ডা সকালে প্রশ্ন করলাম, কিরে; এত কান্না লুকিয়ে আমায় উষ্ণতা দেয়ার কি মানে?
নিরুত্তর, উনুনে নিজেকে আরো ঝলসে নিলো।
শেষ হওয়ার আগে একবার শুধু বলেছিল, আমি উদ্বাস্তু, একসময় তো হাওয়ায় মিলিয়েই যাবো।
পার্থক্যঃ আমি মাটির গভীর থেকে জেগে উঠে আসমানে চলে যাই, আর তোমরা, আসমান থেকে জমিনে!


শুকনো গাছের গুড়ি, আগুনে পুড়তে থাকলো।
চুলোর পৃষ্ঠে দাড়িয়ে প্রশ্ন করলাম, কষ্ট হয় না, জ্বালাপোড়া করে না?
একদিন সকালে কয়লা হাতে নিয়ে দাঁত ঘষতেই, বললো;
আদী জন্ম থেকেই পরিণতি আমার পরোপকারী হওয়া, না হয় নরকের সাঁকো হয়ে মরতে হবে!
পার্থক্যঃ আমি জন্ম থেকে তোমাদের বাঁচিয়ে রাখতে বদ্ধপরিকর আর তোমারা আমায় যতসম্ভব মেরে ফেলছো কুঠারের টোকায়।


গোয়ালের অপরিছন্ন মেঝেতে গোঙাতে থাকা, গাভী।
চোখে চোখ রেখে ফসলের ক্ষেতে তাকালাম, বাসার ফ্রীজের এক কোনেও তাকালাম।
যন্ত্রনা মনে এক গ্লাস দুধ চুমুকে তৃপ্তির ঢেকুরে, বললো;
ঘাস আর লতাগুল্মের বাহারে আমি নিগ্রে দেই এই তরল! তুমি পান করো, আমার বুভুক্ষু সন্তান!
পার্থক্যঃ এই শরীর বলিষ্ঠ হয় তোমার টানে আর তোমরা বলিষ্ঠ হও অকৃতজ্ঞাতায়।


বৃদ্ধাশ্রম; হুইল বা লাঠির ভরে কুঁজো হওয়া পূর্বরক্ত।
নিদারুণ দিনাতিপাত, আমি অনেক সহস্র কাল আগে ফিরে যেতে চাইলাম!
কবরের পাশে নিস্তব্ধতা, কোথাও কেউ নেই।
আমি ফিরে গেলাম নিজের চেতনায়, বিবেক বললো,
তোর অবস্থান কোথায় রে? নিজের ঘরখানা দেখে যা।
এই বৃদ্ধের মাঝে কৈশোরের উন্মাদনা এসে থেমে যাবে।
পার্থক্যঃ সময়ের ক্ষণগণনায় বৃদ্ধ গাছটা নুয়ে যায় মেরুদণ্ডের বাকানো হাড়ে।


আমি হাড়, আমি শিরা ধমনীর প্রবাহ, আমি বিবেক,আমি মুক্ত স্বাধীন!
আমি এক চামড়ার আবরণ! এই তৈলাক্ততা উবে গেলে নিথর এক গ্রন্থির মাঝে পোকার বসবাস।
আমার প্রশ্ন, আমার উত্তর; তাহার প্রশ্ন, তাহার উত্তর!
সব খোয়া গেলো, মাটির চাপায়।
পার্থক্যঃ জন্মই আজন্ম মৃত্যু। মৃত্যুর জন্যই জন্ম।






রামারবাগ, সাভার
১৮/২/২০২২