জয়ীতা,
জানিনা কেমন আছ -
তোমাকে কিছু লিখবো বলে ভেবেছি ক'দিন ,
মনটা ভীষণ রকমের নাজুক ছিল
তাই বড্ড দেরি হয়ে গেল -
জানিনা তুমি পড়বে কি'না !
কি আর লিখবো বলো-
শুধু তোমাকে খুব মনে পড়ছিল তাই ,
তোমাকে প্রথম যেদিন একটা
সুগন্ধি গোলাপ দিয়েছিলাম
মনে আছে তোমার?
তুমি বলেছিলে - এ বুঝি আমার
হাজারটা হীরের টুকরার চেয়েও দামী,
শুধু তোমার হাতের স্পর্শ আছে তাই ।
তারপর অনেকটি বছর কেটে গেছে
একই পথে হেঁটেছি নিঃষ্কন্টক
নির্ভেজাল প্যারালাল।
সেই স্মৃতিগুলো কেন যেন বড্ড
বেশি বিরক্ত করে , বেদনায় পাল্লা ভারী করে।
অনেক চেষ্টা করি এড়িয়ে যেতে
কেন যেন হয়ে উঠে না ,
বেয়াড়া মনটা বোঝেনা - কি করবো বলো !
আচ্ছা জয়ীতা তুমি বলতে পারো
কেন এমনটি হয় ?
তুমি জান আমি খুব ভাল আছি
কারন কষ্টরা আমাকে ভাল থাকার অনুপ্রেরণা যোগায়
দুঃখ গুলো আমার কাছে মধুর হয়ে গেছে তাই।
আমার এমন ভাল থাকার খবরে
তুমি নিশ্চয়ই খুশি হবে সেও জানি,
তাইতো লিখতে বসলাম -
তোমার মেজ কাকী কেমন আছে
জানতে ইচ্ছে করে
আমাকে খুব ভালবাসতো ,
বড্ড ভাল মানুষ সে
খুব মনে আছে আমার -
সে মানুষের কাছে আমার খুব
নাম করে,
এখনো কেউ কেউ বলে সে কথা
শুনে মনটা ভরে যায় আমার,
প্রশংসা শুনলে কারনা ভাল লাগে বলো !
তোমার দাদী বুড়ি এখনো বেঁচে আছে কি ?
যে আমাকে কাছে বসিয়ে খুব
আদর করে এটা সেটা খেতে দিত
আমি খেতামনা বলে কি যে-
সব বলত - স্পষ্ট মনে আছে।
এগুলো  লিখে শুধু শুধু  তোমার সময়
নষ্ট করছি -
এত কিছু  ভাববার অবকাশ তোমার নাই তাও জানি,
তবু অবুঝ মন বোঝেনা বলেই
লিখে ফেললাম ,
আমি বুড়া হয়ে গেছি জয়ীতা
বয়সতো আর কম হয়নি
সত্তর -পঁচাত্তরের মত -
জন্মের সময় কেন যে মা
লিখে রাখেনি তা ভেবেও মায়ের
উপর ভিষণ রাগ ধরে,
বোধকরি অনেক বড় হয়ে গেল
লিপি খানি
ধৈর্য্য ধরে পড়ে নিও
তবুও অন্তত হাজারও কষ্টের
মাঝে একটু স্বস্তি পাব।
ভালবাসার দাবী করে লেখিনি জয়ীতা ,
তা দাবী করবার দুঃসাহস আমার
একেবারেই নেই
থাকবার কথাও নয়,
এখন আর চোখে জল আসেনা
ওরা শুকিয়ে গেছে অনেক আগেই -
ঘুমও আজ কাল চোখের পাতা
থেকে হারিয়ে গেছে
একটা কথা বলতে ভুলে গেছি
কি যেন তার নাম
যে তোমাকে গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিত
সে'কি এখনো তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়?
উত্তর পাবোনা জেনেও লিখলাম
তোমার থেকে আমি এখন অনেক দৃরে
অথচ এমটি হবার কথা ছিল কি?
পরিশেষে -
তুমি ভাল থেকো এই কামনায়
-- হারিয়ে যাওয়া
-- বুড়ো দূর্জয়।
      ****