ভেঙে পড়া বারণ


মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান


তোমার জীবনে দুঃখ-দুর্দশা আসবে
এটা স্বাভাবিক ঘটনা
তাই বলে তুমি থমকে দাঁড়িয়ো না;
জীবন পরিক্ষাকে ভাবো নিছক রটনা।
যাই হোক, তুমি ভেঙে পড়ো না।
কারণ, ভেঙে পড়া বারণ।


১৭৫৭ সাল;
পলাশীর প্রান্তরে বাংলার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল,
মীরজাফর করেছিল চূড়ান্ত মীরজাফরি
সিরাজ-উদ-দৌলা তবুও, অনড় ছিল;
মৃত্যু ভয়েও ভেঙে পড়েনি।
তাই বলছি, বিপদে তুমিও ভেঙে পড়ো না।
কারণ, ভেঙে পড়া বারণ।


১৯৫২ সাল;
জেনেছো নিশ্চয়ই? না জানলে শুনে থাকবে
পূর্ব পাকিস্তান, আমাদের মাতৃভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল।
কিন্তু; বাংলার অকুতোভয় দামাল ছেলেরা ভেঙে পড়েনি,
মাতৃভাষার মান, জীবন উৎসর্গ করে বাঁচিয়েছে।
শহিদ হয়েছে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার ও শফিউল
তবুও, মাথা নত করেনি, মানে ভেঙে পড়েনি।
কারণ, ভেঙে পড়া বারণ।


১৯৭১ সাল!
মনে আছে সকলের,  অনেকে দেখেছে
যখন সমস্ত সমঝোতার দরজা বন্ধ হলো,
নেতা স্বাধীনতা ডাক দিলেন ;
শুরু হলো হায়েনার নগ্ন হামলা----
বীর বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়লো, দেশমাতৃকাকে বাঁচাতে
স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যকে নিজের করে নিতে।
মরণকামড় দিলে পাকিস্তানি হায়েনা দল,
বাংলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনারা ভেঙে পড়েনি
ছিনিয়ে এনেছে বিজয়ের লাল সূর্যকে,
তাই তোমার উচিত ভেঙে না পড়ে টিকে থাকা
কারণ, ভেঙে পড়া বারণ।


১৯৯১ সাল, ভয়াবহ সুপার সাইক্লোনের বিধ্বংসী থাবা,
তারপর অগণিত ;
আইলা, সিডর, মহাসেন ও নার্গিস
বার-বার ফণা তুলে উত্তাল সমুদ্রের বুকে
উপকূলবাসী তবুও ভেঙে পড়ে না, নতুন আশায় ; স্বপ্নের বীজ বুনে
কারণ, ভেঙে পড়া বারণ।


২০২০ সাল, এসেছে মরণব্যাধি; করোনা মহামারি
জীবন থমকে দাঁড়িয়েছে
অর্থনৈতিক অচলাবস্থা চারদিকে বিরাজমান।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা সবই আলোক শিখা বঞ্চিত
প্রয়োজন শুধুই সচেতনতা ও দৃঢ় মনোবলের
ভেঙে পড়লে চলবে না, বিপদ কেটে নতুন ঊষা উদিত হবেই
তাই ভেঙে পড়ো না;
কারণ, ভেঙে পড়া বারণ।


তারিখঃ ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ঃ ৪ঃ৪৩পিএম
ভেঙে পড়া বারণ, স্বপ্নের বাংলাদেশ।