তোমরা বারংবার আমাকে বিস্মিত করেছো।
বনের হিংস্র শিকারীর থেকে লোকালয়ে ঘুরে বেড়ানো
তোমাদের মত দানবরা বেশি ভয়ংকর।
ক্ষুদার্থ পথশিশুর চোখে দেখা ঝলসানো রুটিটিও যদি তোমাদের চোখে পড়ত!
সেই রুটিরও তোমরা ভাগাভাগি করে লুটে নিতে হায়নার মত।
নাহ,তোমাদের ব্যঙ্গ করছি না।
সেই সাহস আমাদের মত দূর্বলদের নেই।


আমি বিপ্লবী নই আর আমার রক্ত বিপ্লবী চে কিংবা মাও সে তুং,ভ্লাদিমির লেলিনের মত উষ্ণ নয়।
নিপিড়ন আর বঞ্চনা আমাদের রক্তকে করেছে শীতল যেমনটা সরীসৃপের।
আমাদের কণ্ঠ আজ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
যে কণ্ঠ ট্রপোস্ফেয়ার পেরিয়ে যেত তা আজ আমার এবং আমার মত দূর্বলদের কান পর্যন্ত পৌঁছায় না।
এখন আমরা সোচ্চার হলেই তোমরা আটপায়ি মাকড়শার মতো জাল বুনে পথ আটকাবে।
কিংবা পরিস্থিতি সামাল দিতে তোমাদের সঙ্গে রুশ,ব্রিটিশ,আমেরিকান রণতরীও যোগ দেবে।
লিটন বয়-ফ্যাটম্যানের ভয়াবহতা ভয় দেখিয়ে দমিয়ে দেবে আমাদের।


তবে হ্যাঁ,মাটি ভেদ করে কুমড়ো বীজ ফেটে যেভাবে বেড়িয়ে আছে কুমড়ো তরু-ঠিক সেভাবে একদিন আমরাও বেড়িয়ে আসবো।ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়বো তোমাদের মাঝে।
বেয়ে ওঠার জন্য তরু যেভাবে লতা দিয়ে পেচিয়ে ধরে ঠিক সেভাবে তোমাদের বক্ষ বেয়ে উঠে তোমাদের গলা চেপে ধরবো।
সেদিন আমরা মাউন্ট সিনাবুং কিংবা ফুয়েগো আগ্নেয়গিরির মত উত্তপ্ত লাভা হয়ে জ্বালিয়ে দেব,নয়তো সর্বনাশা হুয়াংহো হয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে তোমাদের।


সেদিন শূন্যে তুলবো হাত,বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাবো তোমাদের।
আমার সঙ্গে থাকবে তারা,যারা আমার মত ভাবে-
যারা অধিকার বঞ্চিত,
যাদের শীতল রক্ত ছিল তোমাদের খাদ্য,
যাদের বাজেয়াপ্ত কণ্ঠ ছিল তোমাদের সাহস,
যাদের পেশিতে ভর করে চলেছে তোমাদের অর্থনীতি,
যাদের ফুসফুস থেকে বেরিয়ে আসা বাতাস তোমাদের এ শহরকে করেছে সমৃদ্ধ,
যারা দিন আনে দিন খায়,
যারা তোমাদের মত শীতাতপ যন্ত্রের হাওয়া খায় নি,
যারা মুটে-মজুর যারা আকাশ দ্যাখে কিন্তু কখনো আকাশে ভাসে নি। তারাই তোমাদের বাজেয়াপ্ত করবে একদিন।
সকল ব্যবধান দূর হয়ে যাবে আর পৃথিবী হবে মুক্ত আকাশের কত যে আকাশে থাকবে না কোনো দুঃখ,বঞ্চনা,নিপীড়ন।
আর আমি সেই পৃথিবীর প্রত্যাশী।