কী পেয়েছি হিসেব কষতে গেলেই
এবাকাসের গুটি গড়িয়ে যায়,
ক্যালকুলেটরে জমে প্রাগৈতিহাসিক ধূলো,
চশমার কাচ খসে পড়ে
ঝাপসা লাগে সাত আসমান,
মন হয় বেওয়ারিশ শিমুলের তুলো।


এই যে স্টেশনে এসেছি,
অপেক্ষায় আছি।
উদাস চোখে দেখি কত চাকা আসে যায়।
আমারও গাড়ি আসবে,
চাকাহীন, শব্দহীন, যাত্রীহীন
একটাই বগি, তার হাওয়াই ইঞ্জিন।


তবে কেন চাইছি,
কেন বার বার চাইছি
কেউ ঘুমপাড়ানি গান শোনাক?
কেউ এসে বুকের দাবানলে
শরাবুন তহুরা হয়ে যাক.....
পৃথিবীতে কোন পঙ্খীরাজ নেই,
নেই রাজপুত্তুর, নেই কোন জিয়ন কাঠি।
এই কিম্ভুত পাঠশালায় নেই কোন সুহৃদ সহপাঠী।


এই পানিপথের রক্তগঙ্গায় কোথাও পানি নেই,
আছে শুধু বিস্মৃতি, জল-চুরি অপবাদ।
সব চোখ পাথর করা ধুলোঝড়,
আর ঘোড়ার নালে ছুটে যাওয়া গতির প্রমাদ।


হায় রে! বেহায়া মন
আজ আছে কাল নেই, জানে সব।
তবু খোঁজে বেলীর মালা,
খোঁজে নীল খাম আর গোলাপি চিরকুট।
বিনিময়ে কী মেলে?
সু-উচ্চ পর্বত চূড়া,
ভাঙা পা, আর একটা ছেঁড়া প্যারাসুট!


কী পেয়েছি জানতে গেলেই
ক্যাসেটের ফিতে প্যাচ লেগে যায়।
থেমে যায় মায়াবী সুর,
কথাকলির কোলাহল,
থেমে যায় অই ছলছল নদী।
মানুষতো মানুষই,
মুক্তি কি মেলে, ফুল হয় যদি?
বিশ্বাস করো ফুল হতে চাইনা কোনদিন,
সুবাস ফুরোলেই
যার ভাগ্যে লেখা থাকে পরিত্যক্ত ডাস্টবিন।


পরিশেষে, সংখ্যাতত্ত্বের রাজ্যে
এক ছাড়া কিছু নেই।
নেই, নেই, নেই।
জীবনের ভেনচিত্রে সবচেয়ে বেশিটা জুড়ে যে থাকে,
তারই ইচ্ছে করে ফানুশের মতো উড়ে যেতে।
পড়ে থাকে কাঁকড়া খোলস,
অপারগ বেভুল মায়াতে।
এই মায়াবী খেলায় হেরে গেছি,
হ্যাঁ, আমি বিশ্রীভাবে হেরে গেছি।


অপেক্ষায় আছি,
স্টেশনের বুকে সূর্যাস্ত আঁধার ঢেলে দেবার আগে,
যেন যাত্রা শুরু হয়।
এ হিসেব আমি আর মেলাতে পারছি না।
কী পাইনি, কী পেয়েছি কিংবা কী পাব
সব গোলকধাঁধা, এক একটা মৃত্যুকূপ।
ডুবে যাচ্ছি পাথরের মতো,
বাঁচিয়ে তোলার হাতটা ভীষণ নিশ্চুপ।


কী ভীষণ আঁধার জল!
সব মিথ্যের মায়াজাল......
আর সে জালে আটকা পড়েছে একটা চকচকে সার্ডিন,
নাম তার তিলোত্তমা,
তিল তিল করে যার ফুরাচ্ছে দিন।