কবি কি শুধুই শব্দ বোনে?
কেবলই ছন্দের পিঠে ছন্দ চড়ায়?
খুঁজে ফেরে স্রেফ অভিধান কিংবা
প্রকৃতির অপার সবুজ দান?


কতবার তার চোখ ছিঁড়ে
মণির মার্বেল গড়িয়ে যায়
দুষ্টু বালকের চালে....
কতবার পাঁজরে পাঁজর জর্জরিত
যেন কবরের মাটি দু পাশ থেকে চেপে ধরে;
যেন আজাবের সাপ
কাব্যিক রূপ নিয়ে মাঝরাতে দংশায়
নীল হয় ভেতর বাহির....


মাঝে মাঝে মনে আসা অনাহুত আবেগগুলোকে
মনে হয় জনসম্মুখে বিবস্ত্র অসহায়!
নিরুপায় শরীর জুড়ে যাতনা
যেন কসাইয়ের চাপাতির
মুখে চামড়া গোটানো পশু,
যেন মৃত লাশ!
অবহেলায় মর্গে ব্যবচ্ছেদ হচ্ছে
অই অব্যক্ত যন্ত্রণা,
লাশের চিৎকার শুনেছে কে কবে?


মাঝে মাঝে এতটাই একা
যেন নাকে মুখে মাটি গুঁজে স্বজন হেঁটে গেছে
চল্লিশ ধাপ!
সাপের মতো পেঁচিয়ে থাকে
প্রেম আর আশিকির পাপ।


কখনো তার বুকে ঘুমন্ত ফুজিয়ামা
হঠাৎ ক্রোধে ফেটে পড়ে ,
নিজের সবটা জ্বালিয়ে সে জমে যায়
জন্ম নেয় বিষাদ পাহাড়।


কখনো সে নিজেকে অভিজাত ভাবে
নাগরী ভাষার মতো
অভিমানী গৌরব,
কখনো অপভ্রংশ হয়ে ভুলে যায় কী ছিলাম....
কখনো ফানাইয়ের মতো শুকিয়ে সরু
কখনো'বা প্রমত্তা আত্রাই
কখনো'বা বেয়ারা নাগর নদী,
যেন তার সবটাই ছুঁতে হবে।


কবিতা এমনি আসে না।
যন্ত্রণার শিশিরে ফুটে ওঠেনা যে ফুল
হয়ত বা তা নেহাতই শব্দের বিপণন অথবা
পরিপাটি মেকী অহং কানন।


কবিকে ছুঁয়ো না
হাত পুড়ে যাবে,
যেয়ো না তার আঙিনায়
সে তার দেহলিজে লালনের শূণ্যতা পোষে,
বুকে পোষে ক্ষুধার্ত সিংহের নাদ!


কবিতার প্রেমে তুমি পড়তেই পারো,
যেয়ো না কবির কাছে...
সে অস্পৃশ্য রোগে বহুকাল শয্যাশায়ী
প্রেমে সে মৃত অশরীরী,
আবেগে বিদ্রোহী,
সেকেন্ডের ফেরে তার কল্পনা
আরোহী -অবরোহী।


কলিঙ্গের রক্তাক্ত প্রান্তরে সে সফেদ পবন
শূন্য উদ্যান গড়ে
কখনো সে চেতকের তেজ।


কখনো ড্যাফোডিল কখনো বিদ্রোহী
জ্বলন্ত জিরাফ কখনো ভ্যানগগ তারার আকাশ
কখনো হিমালয়
মুহুর্তে এল-নিনো উষ্ণ বাতাস।


যেয়ো না তার কাছে
সে কবি নয়
সে জ্বলন্ত দশানন চিতা,
স্ফুলিঙ্গ ভয়ংকর ছিটকে যায়
আর তারে তুমি ভাবো
কী সুন্দর এক মোহময় কবিতা!