(১)
মাঝেমধ্যে তুমুল একটা আলো,
মুহুর্তখানেকের মতো ক্ষণস্থায়ী,
উদ্দাম একটা আলো-
লোকটার মুখে এসে পড়ে।
তার অনাহারক্লিষ্ট মুখ,
প্রায়ভঙ্গুর হাত-পা আর
হাপরের মতো পিঞ্জর
তখন থর থর করে-
অনির্দিষ্ট এক আশঙ্কায়,
এক আশঙ্কা মিশ্রিত আশায়-
থরথর করে কাঁপে।
পৃথিবীর লক্ষ কোটি অণু পরমাণুর মতো,
কৃমিকীটের মতো ঝাঁকঝাঁক
মানুষের দঙ্গল থেকে
ভগবান কি তাকেই বাছলেন?
(২)
আছে, আশা ফুরায় নাই-
আছে, ভগবানের ঠিক চোখ আছে-
পৃথিবীর দুঃস্থতম লোকটিকে
তিনি ঠিক খুঁজে বার করেছেন।
এই ভাবতে ভাবতে লোকটা,
জীবনে প্রথমবারের মতো,
এক অসংজ্ঞাত এবং অসংগত
অমলিন সুখনিদ্রায় ঢলে পড়লো।
তার মনে পড়লো না গত পাঁচ লক্ষ
ছয় হাজার দিনের অনশনের কথা,
মনে পড়লো না রোগজর্জর ভুলোর কথা,
এমনকি যে গোলাপচারাটা তার
এতদিনের জীবনের একমাত্র সার্থকতা ছিলো-
তার কথাও মনে পড়লো না।
এক পারলৌকিক আভা মুখে মেখে
লোকটা শুয়ে পড়লো স্যাঁতস্যাঁতে
ভগ্নস্তুপে।
(৩)
খবরে প্রকাশ-
বসরার পথে নিশিথ রাতে
সাঁজোয়া বাহিনী।
উদ্ধত তার মণিবন্ধের
আলোকচমক।
পৃথিবীকে আরো একটু ক্লেদমুক্ত করতে-
মনুষ্যত্বের জয়গাণ গাইতে গাইতে-
যখন গেছে,
পথের পাশে পাওয়া গেছে-
কিছু মাথা কুচলানো-
ফুটপাথ লাশ।।