সুপ্রিয়,



          কেমন আছিস?অনেকদিন পর তোকে লিখছি ।কত কথা যে মনে ভীড় করে আসছে--কোনটা ছেড়ে কোনটা লিখি !মহাকালের গর্ভে ক্ষণকাল কোথায় যে বিলীন হয়ে গেছে !তোর ফেলে যাওয়া দিনগুলোকে তবু মনে হয় ''এই তো সেদিন'' ।চলে গেলি-বলে গেলি না ।অদ্ভুত শান্ত মনে তোর চলে যাওয়াটা মেনে নিয়েছিলাম ।আজ সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে মনে হয় তোকে আটকাতে হয়তো পারতাম ।কিন্তু সেই বন্ধন তো ছিলনা যার জোরে দূরে গিয়েও কাছে থাকা যায় !জীবনের নাট্যকার তাঁর সবচেয়ে ভালো সৃষ্টির জন্য এভাবেই লিখেছিলেন যে!
           তোকে চিঠি লিখতে খুব ভালো লাগতো ।বাস্তবকে খানিকটা আড়াল করে,বাস্তবের সাথে কল্পনা মিলে তোর যে মুর্তি,ভালোলাগার আবেশে মুড়ে রাখতো আমার মনটাকে  ।''ভালোলাগে'' এই শব্দটা ছাড়া  ভালোলাগার আনুসঙ্গিক আর সব প্রকাশই ছিল ।
            আমাদের বাড়ীতে আসতিস আদি অনন্ত কাল ধরে বয়ে চলা নদীর মত,আবাহনও নেই-বিসর্জনও নেই ।কবে থেকে তাই তোর জন্য বুক কাঁপতে শুরু করেছিলো মনেও করতে পারি না ।এক রাতে বাবা দাদারা বাড়ীর বাইরে থাকার জন্য মা মেয়েকে পাহারা দিতে তুই ছিলি,মনে পড়ে? আড্ডা শেষ না করেই সেদিন মায়ের কাছে শুতে যেতে হয়েছিলো আমাকে ।তোর সেদিনের উদাসীনতার ক্ষতটা কিন্তু আজও শুকোয় নি ।এখন অবশ্য ক্ষতটাই আছে শুধু-তাতে ব্যাথাও নেই-রক্তক্ষরণও নেই ।বিশ্বাস কর তোর বিরুদ্ধে একটুও অভিযোগ নেই,ছিলও না কোনদিনও ।ব্যাথাটা কবে ভালোবাসা হয়ে গেছে তাও জানিনা ।এই অনুভুতি তাই আমার একান্ত নিজস্ব-ব্যাক্তিগত ।যে হৃদয়ে ভালবাসার জন্ম তার বাসও যে সেখানেই ।আমি তাই আজ আমাতে পরিপূর্ণ ।খুব ভালো আছি-ভালোতে আছি ।আমার এই ভালোথাকায় রোজকার জীবনের অভিমান,বিরাগ,বিতৃষ্ণা,ক্ষিপ্ততার কোন জায়গা নেই ।আমার প্রাপ্য ''তুই''তাই আমারই আছিস ।
            যেখানেই থাকিস ভালো থাকিস-ভালোতে থাকিস ।
                                                                         ইতি
                                                                      ২৮/১১/১৩