একদিন হঠাৎ তোমাকে দেখার পর মনে হলো, তোমাকে খুব প্রয়োজন।
দু'চোখে আমার কতশত বার পড়েছে চোখ কতশত নারীর
কিন্তু থেমে গেছে শুধু তোমার চোখের উজ্জ্বল মায়াতেই।
ঠিক তখনই মনে হলো, আমার এই মায়াহীন জীবনে একটা তুমি প্রয়োজন।
সেদিন তুমি বললে, "পানিটা বসে খাও।"
ঠিক তখনই মনে হলো, আমার এই ভুলে ভরা জীবনে একটা তুমি প্রয়োজন।
রাতের আঁধারে এদিক সেদিক হাঁটা-
দেরি করে বাসায় ফেরা,
কোটরাগত চোখের নিচে কালো দাগ,
যার সাক্ষী প্রতিটা নির্ঘুম রাত।
নিজের ব্যাপারে আমি কতই না উদাসীন!
সেদিন তুমি বললে, "ঘুম কিন্তু মারাত্মক ওষুধ।"
ঠিক তখনই মনে হলো, আমার এই অগোছালো জীবনে একটা তুমি প্রয়োজন।
সেদিন আমাদের সামনাসামনি কথা হলো-
আমি উপলব্ধি করেছি তোমার ইতস্তত বোধ,
তুমি কথা বলছিলে থেমে থেমে।
ঠিক তখনই মনে হলো, আমার এই থেমে যাওয়া জীবনে একটা তুমি প্রয়োজন।
অবসাদে বিমর্ষচিত্তে কিছু স্বস্তির সন্ধানে ঠোঁটে আমার পুড়ে ছাই হয় জীবনের কত গ্লানি।
সেদিন তুমি রেগে মেগে বললে, "সিগারেট খাওয়া যাবে না, যাবে না, যাবে না।"
ঠিক তখনই মনে হলো, আমার এই বিষাক্ত জীবনে একটা তুমি প্রয়োজন।
প্রকৃতির রূপ এক বৈচিত্র্যময় আয়োজন থরে থরে সাজানো সুখ কিংবা দুঃখ।
দেখেছি সেদিন তোমার চোখে অশ্রু,
তোমার টকটকে লাল ভেজা চোখ আমার ভিতরের সমস্ত মিথ্যে গুলোকে গোগ্রাসে হরণ করেছে।
ঠিক তখনই মনে হলো, আমার এই মিথ্যা শূন্য জীবনে একটা তুমি প্রয়োজন।
তুমি ছাড়া আমি ধরণীর,
অস্তিত্বহীন এক বিমূর্ত ধারণা ঠিক যেন বেঁচে থাকার জন্য উদ্বাস্তুর হাহাকার।
তুমি ছাড়া আমি ইউক্লিডের,
কোনো সমান্তরালে ছুটে চলা বিন্দুর বিনতি।
তুমি ছাড়া আমি সাহিত্যের,
অসমাপ্ত কোনো কাব্যের শেষ পৃষ্ঠা।
তুমি ছাড়া আমি জীবনের,
ভুলে যাওয়া কোনো অতীত, গন্তব্যহীন ভবিষ্যৎ।
তুমি ছাড়া আমি,
আলোহীন কোনো ল্যাম্প পোস্ট,
ঠিকানাহীন কোনো চিঠি, ফেলে রাখা কোনো ডায়রি যাতে নেই কোনো স্মৃতি।
যেন তোমাকে ঘিরেই আমার এই অহেতুক জীবনের সব আয়োজন,
তাই শুধু তোমাকেই প্রয়োজন।