ষড়ঋতুর পরশ দেবো
মঈন তাজ


অনিন্দিতা কেনো তুমি থাকো আড়ে আড়ে,
আম্র মুকুল এনে দেবো গ্রীষ্ম এলে পারে।
স্বর্ণচাঁপা নাগেশ্বর আর দেবো জারুল ফুল,
সোনালু ফুল দিয়ে তোমার বেঁধে দেবো চুল।
কনকচাঁপা করঞ্জা আর কামিনী ফুল নিয়ে,
ভরিয়ে দেবো তোমার আঁচল নিমের মুকুল দিয়ে।
গ্রীষ্মকালের তপ্ত দুপুর উঠবে যখন হেঁসে,
গাছের ছায়ায় মন জুড়াবো তোমায় ভালোবেসে।


বর্ষা এলে এবার তোমায় দেবো কদম কেয়া,
ভরা গাঙে নাও ভাসাবো বেয়ে প্রেমের খেয়া।
দোলনচাঁপা দোপাটি আর দুপুরমণির মেলা,
শাপলা শালুক পদ্ম বিলে করবো জলের খেলা।
চালতা যূথী নয়নতারা কলাবতীর ফুলে,
কচুরিপানা ফুলের বাহার দেখবে নয়ন খুলে।
কলমিলতার ফুল দেখিবে পাতার ফাঁকে ফাঁকে,
ডিঙি নৌকা বায়বো দু'জন বিলে ঝিলের বাঁকে।


শরৎ এলে তোমায় দেবো আকাশ রাঙা শাড়ি,
শুভ্র সাদা আকাশ দেবো যাবো মেঘের বাড়ি।
হিমঝুরি আর গগনশিরীষ মল্লিকা ফুল দিয়ে,
মালতী আর শিউলি ফুলে ভরিয়ে দেবো হিয়ে।
সাদা কাশের নরম ছোঁয়া দেবো তোমার গালে,
চলে যাবে নদীর মাঝি লাগিয়ে হাওয়া পালে।
রঙধনুর ঐ আলতা ছানি রাঙিয়ে দেবো পায়ে,
শরৎকালের হিমেল পরশ লাগিয়ে দেবো গায়ে।


পাকা ধানের পরশ দেবো হেমন্তকাল এলে,
শিশির ভেজা নরম ঘাসের চাদর দেবো মেলে।
সবুজ মাঠে সোনালি ধান উঠবে হেসে হেসে,
নতুন ধানের মধুর ঘ্রাণে হৃদয় যাবে ভেসে।
কৃষক ভায়ের সোনার ফসল পাকবে যখন ক্ষেতে,
নবান্নের ঐ আয়োজনে উঠবে সবাই মেতে।
নতুন ফসল পেয়ে সবার ফুটবে মুখে হাসি,
বলবো আমি অনিন্দিতা তোমায় ভালোবাসি।


ঘোর কুয়াশা আসে যদি তোমার প্রিয় শীতে,
দূর দিগন্ত দেবো পাড়ি কাশ্মীরি শাল নিতে।
সবুজ মাঠের সর্ষে ক্ষেতে দেখবো তোমার ছবি,
তিশি ফুলের রঙ দেখে তাই হয়ে যাবো কবি।
মিষ্টি রোদের কোমল পরশ মাখিয়ে দেবো গায়,
গা কাঁপিয়ে উঠবে না আর শীতের হিমেল বায়।
মিষ্টি খেজুর রসে তোমার ভরিয়ে দেবো হাঁড়ি,
তিল বাদাম আর খেসারী ফুল দেখবে কি বাহারি।


বাসন্তী রঙ শাড়ি দেবো এবার বসন্ততে,
ফাগুন রঙের পরশ দেবো প্রকৃতি রঙ হতে।
শিমুল পলাশ কৃষ্ণচূড়া সাজবে ফাগুন রাগে,
রঙ বাহারি ফুলের দেখা পাবে কুসুম বাগে।
পাতার আড়ে কালো কুহু উঠবে ডাকি ডাকি,
ঋতুরাজের রঙের পরশ দেবো তোমায় মাখি।
ষড়ঋতুর পরশ দেবো তোমার গায়ে মেখে,
সময় আমার কেটে যাবে তোমায় দেখে দেখে।


যশোর
১০/০৯/২১