শরতের কবিতা
মোজাম্মেল সুমন


আমি মৃদুপায়ে হেঁটে চলছি পৃথিবীর পাঠশালায় যেখানে বইছে প্রকৃতির নির্মল বায়ু,
প্রাণবন্ত সরস ঐন্দ্রজালিক অনুভূতিতে ক্রমাগত বেড়ে চলছে আমার প্রাণের আয়ু।
প্রজাপতির ডানায় ডানায় উপচে পড়ছে মায়াবী শুভ্রকেশ যা প্রজাপতিকে দোলায়,
হঠাৎ করে একটা প্রজাপতি আমার বাহুতে এসে মনের ভিতরের বিষন্নতা ভোলায়।


আমার অস্তিত্বে দারুণভাবে এক নিবিড় সরলা কোমলমতীর স্পর্শ বইতে থাকে,
আজ কোনো অহেতুক কল্পনাজল্পনা নয় বরং শুদ্ধতার নিরিখে বাস্তবতা ডাকে।
শরতের ঝকঝকে নির্মল মেঘমুক্ত নীলাকাশের পরিধি মুগ্ধতার শিখরে গড়ায়,
ক্রমাগত ভালোলাগার স্নিগ্ধতাময়ী প্রতিধ্বনি নিঃশ্বাসের আলিঙ্গণে জড়ায়।


ঝিলিমিলি আলো সকালের আঙিনাতে উপচে পড়ে অবাধ ঝর্ণার মতো,
খুশি খুশি আলোর বিচ্ছুরণ ছড়িয়ে ছড়িয়ে যায় প্রকৃতির সীমানা যতো।
রঙধনু পাহাড়ি রাস্তার মতো চলা এঁকেবেঁকে সাতরঙা আবির মাখে গগনে,
রাতের ধবধবে জ্যোছনা অনুভূতির সিংহাসনে দোলা জাগিয়য়ে তোলে মননে।


প্রভাতের শুভক্ষণে শিশিরবিন্দু ধানের ডগায় নিজেকে উজাড় করে রাখে,
গ্রামবাংলার প্রতিটি কৃষক রোপিত সন্তানসম ধানচারায় স্নেহের পরশ মাখে।
ফুলের গন্ধে মাতিয়ে তোলা শাপলা জবা টগর শিউলি কিংবা কামিনি,
দোয়েল কোয়েলের মনোমুগ্ধকর কাকলির রেশ থেকে যায় পুরো যামিনী।


বিকেলবেলা পুকুরে মাছেদের এক অপরুপ জলখেলার দৃশ্য মন কাড়ে,
সবুজ বৃক্ষের পাতায় পাতায় সূর্য কিরণের বিকিরণ দারুণভাবে বাড়ে।
শরতের বাতাসে তনুমনে নিবিড় পবিত্রতার আলোছায়ার সঞ্চারণ ঘটে,
ঐশ্বর্যের মানদন্ড প্রতিফলিত কচি ডালে কিংবা মাঝি যখন নদীর তটে।


ঝকঝকে আকাশে মনোরম বাতাসে কাশবনে কাশফুল দুলতে থাকে,
ভালোবাসার অনুভূতিগুলো গুচ্ছগুচ্ছ কবিতা হয়ে প্রিয়জনকে ডাকে।
শরৎ যেনো ভালোবাসার দেবী কিংবা ষোড়শী কিশোরী মেয়ের ছবি,
আমি আজন্ম শরতের স্নিগ্ধ ছোঁয়ায় হয়ে উঠতে চাই ভালোবাসার কবি।