জুলাই-২৪ এখনো স্মৃতি হয়নি,
বরং এখনো বর্তমান!
এইতো সেদিনই রাস্তায় নামলাম
খু/*নি হাসিনার স্বৈরযন্ত্রের শৃঙ্খল ভাঙতে।
বাংলার জমিন থেকে বিদায় জানালাম
এক দৈত্যাকার অভিশাপকে!

কিন্তু এখন মনে হচ্ছে
বাংলার অভিশাপ কেবল একটা দুইটা না!
বরং এটা এক নেভার-এন্ডিং সাইকেল।

একটাকে তাড়াবেন?
আরেক উটকো শকুন এসে কাঁধে চড়ে বসবে (পড়ুন মাথায় চড়ে বসবে)!
লুটপাট করে নিয়ে যাবে গরীবের ভাতের চাল,
অভাবীর চিকিৎসার শেষ সম্বল;
কেড়ে নেবে মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয় পৈত্রিক ভিটা,
খুবলে খুবলে খাবে মগজ, হৃদপিন্ড;
বুকের তাজা রক্ত দিয়ে মেটাবে পিপাসা;
একের পর এক প্রাণ কেড়ে নিয়ে
লাশের উপর চড়ে দেবে পৈশাচিক নৃত্য!

আমি একটার পর একটা শুধু দেখেই যাবো!
তুমি ভাববে আমি হয়তো বোবা!
অথবা জ্ঞান-বুদ্ধিহীন এক অটিস্টিক!
সবাই যখন কানে-কানে ফিসফিস করবে,
আমি তখনও দেখেই যাবো!

হায়েনারা একে একে সব কিছু খেয়ে নেবে,
টাকা, জমি, খাদ্য, পথ্য, সব!
রক্ত খাওয়া তখনো অবিরত!
ছিড়ে-খুবলে নিতে থাকবে গায়ের মাংস,
থেঁতলে দেবে বুকের পাঁজর!
পড়ে থাকবে শুধু কঙ্কাল আর মাথার খুলি!
আমি শুধু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকবো।

তারপর যখন দেশের খালে বিলে আর মানুষ থাকবে না,
ওরা চেয়ে দেখবে আমিই আছি কেবল!
ধীর পায়ে তারা এগোতে থাকবে আমার দিকে;
মুখে তাদের বিজয়ীর ঢংয়ে হিংস্রতার হাসি!
আমি তখনো নিরব থাকার সিদ্ধান্ত নেবো।
নির্বিকার চেয়ে থাকবো আকাশের দিকে!

তারা এসে আমার মাংস খাবে,
আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো,
রক্তের ফিনকি দিয়ে গা ভিজে যাবে তাদের,
আমার সবকিছু তারা খেয়ে নেবে,
শুধু খাওয়া বাকি তখনো চোখ, ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, মগজ,
আর আমার ভাঙ্গা ডানহাত খানা!
যে চোখ দিয়ে আমার মাকে দেখেছি,
ফুসফুস ভরে নিয়েছি বাংলার ঘ্রাণ,
হৃদয় আর মগজে রেখেছি প্রিয় মানুষকে!

ততক্ষণে আমার উপর উঠে তারা নৃত্য দেবে,
বাংলার শেষ দুর্বলের উপর!
তবুও আমি চেয়ে দেখবো!

নৃত্য শেষে যখন আমার হৃদয় খেতে চাইবে,
আমি তখন আর নিরব থাকতে পারবো না!
ফুসফুস থেকে ঠেলে এক চিৎকার দিয়ে উঠবো!
চিৎকার না ঠিক, গর্জন!

আমার গর্জনে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হবে!
ভয়ে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকবে বনের সিংহ!
লেজ গুটিয়ে বাঘেরা লুকাবে খরগোশের গর্তে!
প্রতিধ্বনিতে ভেঙ্গে পড়তে থাকবে হিমালয়,
আর প্রশান্ত মহাসাগরে উঠবে দানবাকৃতির ঢেউ!

হায়নাগুলো তখনো রিরি করে হাসতে থাকবে,
তাচ্ছিল্যের সুরে আমায় নিয়ে টিটকারি করবে!
রাগে, ক্ষোভে আমার রক্তহীন হৃদয় কাঁপতে থাকবে।

আমি তখন “আবু সাঈদের” অব্যবহৃত লাঠি হবো!
আমার ভাঙ্গা ডান হাতটাতে কুড়িয়ে নেবো আমায়!
এবার আর আমাকে দমিয়ে রাখা যাবে না!

মারতে মারতে যখন তারা বমি করতে থাকবে,
“আবরার” তখন আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে!
মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে পড়ার আগেই
“মুগ্ধ” আমাকে বলবে, “পানি লাগবে, পানি?”

প্রতিশোধের আগুনে পুড়তে থাকবো ওদের!
এরপর হিমালয় ভেঙ্গে ৫০০ বছর কবর দেবো!
ঠান্ডায় যখন ওরা হিম হয়ে যাবে,
গলায় রশি বেঁধে ওদের দিয়ে ঘুড়ি ওড়াবো!
৭ বার করে ফাঁসি দেবো মেঘের সাথে ঝুলিয়ে!

তারপর তাদের টুকরো করে ভাসিয়ে দেবো খড়স্রোতা মেঘনায়!
সবশেষে কুড়িয়ে এনে বস্তায় ভরবো;
এক এক করে সবক'টাকে খাওয়াবো
এরশাদ শিকদারের পুকুরের মাছ দিয়ে!

অবশ্য কিছু কিছু নিয়েও আসবো সাথে,
মাঠে মাঠে ঘুরে বেরানো কুকুরগুলো যে তখনো ক্ষুধার্ত!

(লেখা হয়েছে: 03:35 am, 12.07.2025)