নিলো তুমি ওঠো চেয়ে দ্যাখো ঐ
বাঁকের মোড়ে বনের আড়ে চাঁদ ডুবে যায়
জোয়ারে ভাঙে নদী
কুল ঝাপটে পড়ার শব্দ শোনা যায়।
এখনো সেই অক্রূর মাঝি ছেঁড়া পালে
খোঁজে উজান বাঁকের তীর
অশান্ত নদী নীর ভাঙে ক্লান্ত হালে
বৃদ্ধ শরীর তবু সুখের ঠিকানা জোটে নি কপালে।


চেয়ে দ্যাখো ঐ বুড়ো মকিম গাজী
জলকন্যার জলে জাল ফেলে বসে আছে ঠায়
বয়সের ভারে ন্যুব্জ তবু ঘুম ভুলে গ্যাছে
দুঃখী সংসার আর পেটের দায়।
সেই বীর মুক্তিযদ্ধা পঙ্গু শাহেদালী
ক্র্যাচ ঠেলে ঠেলে গঞ্জ হতে ফেরে গাঁয়
নিজের ঠিকানা বড় অচেনা ফেলে আশা দিনগুলি।
জীবন দিয়ে এনেছিলো যে স্বাধীনতা
মা মাটি আত্মার মমতায়
সে দেশ ও স্বাধীনতা দিলো তাঁদেরে ভিক্ষার ঝুলি
করুণা অবজ্ঞা অনাহার ধুকে মরা উপহার।
এখন ঘুমে থাকা শোভা পায় না তোমার।
নীলো তুমি ওঠো।


নীলো তুমি কি জানো সেদিন?
দেশের খাদ্যমন্ত্রী বললেন সাংবাদিকের ডেকে
তার সরকার খাদ্যের সুষ্টবন্টন ও দারিদ্র বিমোচনে
অজস্র সুনাম কুড়িয়েছে বিদেশ থেকে।
অথচ ঐ শোন! ফুলবানুর তিন তিনটে অনাথ সন্তান
তারা জানে না মায়ের মুখে শোনা ঘুমপাড়ানিয়া গান
ক্ষুধা যন্ত্রনায় ঘুম আসেনি বিছানায় লোটে
করুণ ক্রন্দনে রাতের প্রাচীর কেঁপে কেঁপে ওঠে।
আমিও ঘুম আসতে পারি না মোটে।
নীলো তুমি ওঠো
তোমার আমার একটা কিছু করতে হবে যে।


নীলো তুমি কি জানো ত্রান ও পুনর্বাসন মন্ত্রী সেদিন
বেড়াতে গিয়ে প্রতিবেশি দেশে
বলে এলেন গর্ব ভরে কতনা উল্লাসে
তার সরকার দেশের সকল বাস্তহারা গৃহহীনদের
শতভাগ ব্যবস্থা করেছে সুন্দর গৃহের।
অথচ চেয়ে দ্যাখো ঐ
কমলাপুর মহাখালি সায়েদাবাদ রেলস্টেশন
আগারগাঁও আমিন বাজার সদরঘাটসহ দেশের সর্রত্রই
রাস্তা ফুটপাত ডাস্টবিন ময়লা আবর্জনার পাশে
ব্রিজ কালবার্ড সিঁড়ির নীচে
লাশের মত আশ্রয়হীন-গৃহহীন মানুষ শুয়ে আছে।
কোটি মানুষের এমন দুঃখের রাতে আমার শয্যাতে
সুখের এত ঘুম ঘুমোতে নেই
চলো ওদের কাছে যাই!
অনাথ আশ্রহীনে একটু হাত বুলাই
যতটুকু পারি সাহায্যের হাত বাড়াই।
ণীলো তুমি ওঠো।