এ গাঁও এ জলকন্যার ধার
এ কাশবন হোগলাপাতা শরের আঁধার
জোছনা জোয়ার কলস্বনঃ
অফুরান উল্লাস বিকাশ অবকাশ শিহরণ
আমায় কোথাও দেবে না যেতে।


এ নদী নদী তট গিরি পথ ছায়া ঘেরা বন
এ দীঘি দীঘির ঘাট এ মাঠ এ বাট
ঘর ফেরা এ মেঠো পথ
এ হাট এ নাট এ গেহ এগাঁও
আঙ্গিনা অগণন-
এ আকাশ রবি শশী রৌদ্র বরিষণ
পাখ-পাখালী রাখালী শাখালী কূজন
অফুরান লতাপাতা গল্প কথা জীবন ঢল
শিশির শেফালি হরিতকী মায়ার ফল
ডালিকা মালিকা বালিকা মৃনাল
চাঁদমুখ উৎসুক নয়নের টান
আরক্তিম রক্ত কপোল মায়ার আহ্বান
আমায় কোথাও দেবে না যেতে।


এ রং এ রূপ হাঁসি-কান্না ধূলির পরশ
বিচিত্র ঋতুর ক্ষধণ
এ সবুজ অবুঝ ঘাসের বাঁধন
জড়িয়ে বাধে কী যে মমতায় প্রিয়-প্রিয়তমাসম।
কোথাও যাব দু’পা বাড়ালেই পথ আগলে দাঁড়ায়
এ গাঁয়ের ধূলিকণা কাদা জল
চোরাকাঁটা ঝরাপাতা গুল্মলতার দল
জড়িয়ে ধরে পায়
নিজের ছায়াখানি নিজের অজানায়
গড়িয়ে পড়ে জড়িয়ে কাঁদে হায়
বলে ছায়ারই ভাষায়-
এ মাটি এ গাঁও গেঁয়ো পথ ছায়া বন
কাদা জল ধানের গন্ধ হাওয়ার শিহরণ
নিত্য দেখা আকাশ উঠোন
এ মুখ এ সুখ-দুঃখ মায়ার বাঁধন
এ মন, মনের মানুষ খেলার সাথী অবহেলে
আমি যাব না অন্য কোথাও
আমার এ চেনা জানা সোনার ভূবন পিছু ফেলে।


আমিও অহর্নিশি ভাবি তাই
জীবনের বাকী ক’টা দিন এখানেই থেকে যে্তে।
ফুরালে আয়ুষ্কাল এক হয়ে মিশে যেতে চাই
এখানে, এ গাঁয়ে, গোরস্তানের এ ধূলি-মাটিতে।