তুমি আমার বলেই এখনো এত ভালবাসি
বুকে জড়িয়ে ধরে জীবন বাজি রাখি
মান রক্ষায় রক্ত স্নান করি
সুখ দুঃখের ইতিহাস জন্মাই
তুমি আমার বলেই-


অন্যথা বিদ্রোহের ভয়াল লেলিহানে
তোমার দেহভূজ সোমত্ত শরীর
মানচিত্র পতাকা নীলাম্বরী ভষ্মিভূত করে
নতুন কোন গড়নে নতুন কোন প্রতিমা রূপে
ইচ্ছে মত মনের সুখে দিলাম গড়ে।
কিন্তু তুমি আমার মা বলেই
সব কর্মে ছেদ পড়ে।
গর্জে ওঠা বজ্রসম অস্ত্রগুলো নামিয়ে রাখি
ধৈর্যের রজ্জুতে নিজেকে কঠিন করে বাঁধি
জ্বলে ওঠা আগুনে ছাই চাঁপা দেই
ক্রুদ্ধের কম্পনে নিজেই কাঁদি
তুমি আমার মা বলেই-


জান মা! তোমার ঘৃণিত কার্যকলাপ
সাম্রাজ্যবাদীর সাথে ভাব
পরকীয়া প্রেম কুলটা আলাপ
গণতন্ত্রের আড়ালে স্বৈ্রাচারী সংলাপ
নিত্য নব স্বৈরিণী স্বভাব?
আমাকে ধৈর্যচ্যুত করে বাঁধ ভেঙে দ্যায়
ভিতর বাইরে ৫২,৬৫, ৬৯, ৭১-‘র
দূর্বার অস্ত্রগুলো রণাঙ্গন দ্যাখে
আগুন আগুন হাওয়া এসে ঝাঁপটে পড়ে
চেনা চেনা বারুদের গন্ধে শিরদাড়া চারা দিয়ে ওঠে।
আমিও অধীর অন্য মানুষ!
ভয়ানক একটা কিছু করার জন্য
এদিক সেদিক সিংহের ন্যায় হিংস্র পায়চারী করি।
কিন্তু পর ক্ষণেই একটা গোপন রক্ত মমতায়
শিশুর মত ভেঙে পড়ি, আঁচলের পাশে গিয়ে দাঁড়াই
সব বিদ্রোহ-বারুদের উত্তাপ ভুলে যাই
তুমি আমার মা বলেই-


আর যখন দেখি
ভণ্ড গণতন্ত্রের নেকাবে তুমি বেশ্যাপাড়ার মেহমান।
বিদেশী ছত্রচ্ছায় বার বার নৈরাজ্য
বার বার জরুরী আইন, জনতার রক্ত-গণঅভ্যুত্থান।
নির্বাচনের নামে নতুন কুহক, নতুন ভেল্কি
ভোগের হিলা বাহানায় বদলায় শুধু শয্যাগত পদ্দতি
সরকার আর দলের নাম।
সকলের একই উদ্দেশ্য একই নেশা চেটে পুটে খাওয়া
তোমার উত্থিত শরীর, নরম লজ্জা স্থান।
তুমিও নীরব সমর্পিতা, কোমল দেহে এলিয়ে থাকো
মাগো! তখন আর আমি মানুষ থাকি নাকো!
যমরাজ যমসাঁজ যমের যম সাজি
হিরোশিমা নাগাসাকি ধ্বংসের মত
তোমাকে ধ্বংসে হই রাজি।


কিন্তু! পরক্ষণে যখনই ভাবি
তুমি যে আমার মা, জন্মভুমি জননী
তোমার জন্যই এত শহীদ এত রক্ত এ্ত পঙ্গুত্ব  
এত ইজ্জত এত মাতৃত্ব এত মমত্ব-মহত্ব দান
এত গাজীর মরণ বরণ দূর্বার অভিযান।
তখন ফিরে থাকি, অগ্নুত আঁখি দু’হাতে ঢাকি
বিস্ফোরণ্মুখ বেদনারে পাঁজর চাপা দিয়ে চেপে ধরি
হু হু উহু করে কেঁদে উঠি।
তুমি আমার মা বলেই-