শ্রদ্ধেয় পাঠক/কবিগন
আমার সালাম ও শ্রদ্ধান্তে দুঃখের সহিত জানাচ্ছি যে, আমি আপনাদের কবিতার আসরে নিয়মিত হতে পারছি না। কারণ কর্ম ব্যস্ততা এবং শারিরীক কিছু অসুস্থতা। আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনারাও সবাই ভাল থাকুন,  সুস্থ থাকুন এ কামনা করি।
-------------------------------------------


এখানে সূর্য ওঠে প্রতিদিন, মাঠ ঘাট পথ-প্রান্তে পড়ে আলো
জেগে ওঠে গ্রাম, ঘাস ফসল, ফুল ফল নিকোনো উঠোন।
উত্তরের হাওয়ায় হামাগুড়ি দিয়ে আসে শীতের কাঁপন
আসে মঙ্গা- ক্ষুধার দাপট, সুদের মহাজন।
অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টিঁ আয়লা সিডর মহাসেন
ফসল কাড়ে ছাউনি উড়ায় তসনস করে সংসার
অকাল মৃত্যু অঝোর কান্না বেদনার হাহাকার আনে
জোয়ার জলোচ্ছ্বাস বানের পানি মহামারি আঘাত হানে
এখানে জীবন মানে অথৈ পাড়ি ঢেউয়ে ভাঙা দুই পার।


দু’মুঠো ভাতের জন্য হন্য হয়ে ফেরে গরীব গ্রামবাসী
শহর বন্দর গঞ্জে যায়, চাকুরী খোঁজে, রিক্সা চালায়
ঝিয়ের কাজ করে, খোলা আকাশ ফুটপাত বস্তীতে ঘূমায়
কত না লাঞ্জনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে
ট্রাক উল্টে, গার্মেন্টস ধ্বসে, আগুনে পুড়ে মরে।
গরীবের সামান্য অধিকার
কেড়ে নেয় মহাজন জোতদার জমিদার
পাইক পেয়াদা আমলা মন্ত্রী স্বৈরাচার দুরাচার সরকার।
এতত সত্বেও বিধাতার করুণা অপার
কাস্তে-কোদাল, লাঙল-জোয়াল, কর্মী হাত, হালের বদল
বুকের সাহস, যা কিছু আছে গরীব জনতার
তা নিয়ে উঠে দাঁড়ায়, পা বাড়ায়, আবার খাড়ায়
ভালবাসা হাতের ছোয়ায় নূয়ে যাওয়া মাঠের ফসল।
ঘর বাঁধে, ছাউনি বদলা, পৈঠা বানায়, আলপনা আঁকে
ভরাট করে ক্ষয়িত উঠোন।
লাউয়ের ডগা পুঁইয়ের লতা মাচায় উঠায়
হাঁস মুরগী ছাগল ছানা খোয়ার খামার করে যতন
আশার বসতি সাঁজায় নতুন করে দেখে নতুন স্বপন।


আবার মাদার বাঁশ নামায় ওঝা বৌদ্ধ খুঞ্জা নাচে
গাজী কালু চম্পাবতী চণ্ডিদাসের পুঁথি হয়, মেলা বসে
আখ কাটে, গুড় বানায়, হাঁড়ি বাঁধে খেজুর গাছে
মিষ্টি রসে পিঠা পায়েস শিরনি খায়
নাইওর যায় নাইওর আসে
রঙ্গ রসে সুদিন ফেরে মাঠে পাকে ধান।
উলু ধ্বনি আযান ওঠে ভক্তির বাতাসে
দূর-দুরান্তে ছড়ায় স্রষ্টার গুণগান-
এক হয়ে দাঁড়ায় এসে গাঁয়ের শশ্মান গোরস্তানে
এখানে সকলই সমান।