মুমু আমার মুমু
মনে হয় তুমি আজো বেঁচে আছো
বেঁচে আছো আমার অস্তি মজ্জা অনুভূতি সত্ত্বায়।


এখনো মনে হয় উঠোনে বারান্দায়
রন্ধনশালা কলতলা শিউলিঘাট গোসলখানায়
তুমি ভোর বিহান ঘোর দুপুর বৈকালিক নিয়মে ব্যস্ত
হাঁড়ি বাসন রান্নার উপকরণ ধোয়া মোছায়
ধান ছড়ানো পাতা কুড়ানো গোবর ঘাটা উনুন লেপায়
ছাই ফেলা হাস মুরগির যতন লওয়া এটা সেটায়
কত কী যে করতে গিয় এলিয়ে ফেল মোটন খোঁপা।
পুঁইয়ের মাচা লাউয়ের ডগা লতার আঁকশি ছাড় গিয়ে
বাঁশের কঞ্চি বাঁকতে গিয়ে হঠাৎ হাতে লাগে ব্যথা
বেজে ওঠে কাঁকনগোছা আগে যেমন বাজত প্রিয়ে।


কৃষ্ণচূড়া নারিকেলের ছায়
শাখা পাতা নড়াচড়ায়, হঠাৎ কিছু খসে পড়ায়
ছাঁদের পাখি গাছের পাখি শব্দ করে উড়ে যাওয়ায়
ফুলের পাপড়ি শুকনো পাতা পড়লে তলায়
হাঁসের ছানা মুরগির বাচ্চা যদি একটু পাখনা ছড়ায়
আড়ের কাপড় ঘরের পর্দা কখনো যদি হাওয়ায় জড়ায়
পাশের বাড়ির পোষা কুকুর কিছুর পাছে ছুটলে ত্বরায়
গোসাপ নেউলে পালাতে গিয়ে যদি কভু ঝোপে জড়ায়
তাতে যেটুকুই বা শব্দ হয়
বাড়িটা এখন এমনই ভূতরে প্রায়
থালা বাসন ছিটকে পড়লেও
তোমার উপস্থিতিই আমার কাছে মনে হয়।


কার্তিকের মাঠ দূরের গ্রাম নীল ধোয়া সব গাছের সারি
মাঝখানে সব সোনার ফসল উঁচু সড়ক দূরের পাড়ি
ছোট্ট নদী জলে ভরা ঘুঙুর পড়া যাচ্ছে হারি
দিগ আঁচলে নীলের ছড়া নীলাম্বরী
উড়তে দেখলেই অমনি হরি!
তোমার কথাই পড়ে মনে।
স্মৃতি থেকে যায় না মোছা তোমার ছবি-অনুভূতি
যতই আমি যুদ্ধ করি ততই জড়াই তোমার প্রতি
ভুলেই যাই তুমি নাই, কেড়ে নিছে বিশ্বপতি।