(তৃতীয় অংশ)


দ্যাখো ঠায় দুপুর রোদে গলির কাছে রাস্তার পাশে
অন্ধ ভিক্ষুক হাত পেতে তোমার অপেক্ষায়
ঈশব্র পাটুনীর নায় কালকেতুরের চরণ ছোঁয়ার মত
তোমার দয়াদ্র হাতের ছোঁয়ায় জীবন সোনা করে
মঙ্গল বরে ঘরে ফিরে যেতে চায়।
পার্কের মোড়ে ভাসমান দোকানের কাছে গাছের ছায়
ঠেলাগাড়ি রিক্সায় শরীর এলিয়ে দরিদ্র চালক
যাত্রী ও কাজের অপেক্ষায় ক্লান্তির আলসে আঁখি মুদে
‘এই যাবে’ বলে তোমার সুমিষ্ট কণ্ঠস্বর শুনে
উঠে পড়ে কাজে লেগে কোচর ভরা পয়সা আর
গামছা ভরা খাদ্য নিয়ে ঘরে ফিরে যেতে চায়।
কল-কারখানা, গার্মেন্টস, গৃহপরিচালিকা, নির্মান শিল্পে
এই শহরের রথের চাকা যে অনাথেরা প্রতিদিন ঘুরায়
পাঁজর ভাঙা খাটুনি রক্ত পানি তবু ন্যায্য মজুরি নাহি পায়
তাঁদের বেদনার শৃংখলে তোমার মুক্তি চুম্বন চায়।
কিন্তু স্বাধীনতা তুমি কোথায়?


স্বাধীনতা তোমার জন্য এখনো অনেক শ্যামলী নাসরীন
নীলিমা ইব্রাহীম, মিলি রহমান, লিলি চৌধুরী
বীরাঙ্গনা মা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বুদ্ধিজীবীর সন্তান
অগ্নি বেদনা দাহন যন্ত্রনায় প্রহর গোনে!
অনেক আল-মাহমুদ, সৈয়দ সামচুল হক, নির্মলেন্দু গুন
তোমার অপেক্ষায় কবিতার পাণ্ডুলিপি সাঁজায় যতনে।
অনেক ইমদাদুল হক মিলন, আনিসুল হক, রাবেয়া খাতূন
উপন্যাসের পাতা ভরে তোমার কাল্পনিক দেহতনু গড়ে।
অনেক শাহাবুদ্দিন, হাসেম খান, রফিকুন্নবী, দ্রুব এষ
কল্পনার রং তুলি ক্যানভাসে তোমাকেই সাঁজায়
উদিচি, অরণ্যক, জনতার মঞ্চ তোমার অপেক্ষায়
তুমি মঞ্চে এলেই নাটকের আমূল পট পরিবর্তন
দুঃখী দর্শক প্রজাগণ সে আশায়
অধীর অপেক্ষায়- মঞ্চ চায়।
স্বাধীনতা তুমি কোথায়?