(পঞ্চম অংশ):


স্বাধীনতা তুমি এলেই জনতার মিছিল সার্থক হবে
মাঠ ভরা ফসল লয়ে কৃষক ঘরে ফিরে যাবে
কিষাণীর উঠোন ধানের গোলা পূর্ণ হবে
শিশু কিশোর কিশোরীর আনন্দ জাগরণী গান
আতশবাজী ফানুস ঈদগাহ পাড়া মাতাবে
ভাইহারা বোনহারা মানুষ সব হারানোরে খুঁজে পাবে।
ছোট্ট ভাবী তিল তিল মরণ বেদনারে ভুলে যাবে
মা ও বোনের ঝাপসা চোখ সুখ আলোকে দোল খাবে
শহীদ জননী বীরাঙ্গনা মা তোমাকে জড়িয়ে চুমু খাবে।
বাবার চায়ের কাপ টেবি্লে উষ্ণতা ফিরে পাবে
গর্বের গল্পে ভরা ডাইরী উত্তরপ্রজন্মে খুলে দেখাবে
দেশজোড়া শহীদ মিনারগুলো গর্বে মাথা উঁচু ঘুরে দাঁড়াবে।


স্বাধীনতা তুমি একবার আসো! মায়ের ঝাপসা চোখে
বাবার নিঝুম টেবিলের পাশে একবার এসে দাঁড়াও
প্রাণ খোলা হাসি হাসো
ভাইহারা বোনহারা সন্তানহারা মানুষের
রক্তাশ্রু মুছে দিয়ে যাও।
শিশুর দোলনায় সুখের ঘুম নিয়ে আসো
কিশোর কিশোরীর স্বপ্নের আঙিনায় ভোরের হাসি হাসো
মহান মুক্তিযোদ্ধার ক্লান্ত-শ্রান্ত দেহে প্রশান্তির পরশ বুলাও
কবির কবিতার খাতা উপন্যাসিকের উপন্যাস
সুরকারের স্বরগাম শিল্পীর ক্যানভাস
প্রতিক্ষারত প্রেমিক চোখ একবার ছুঁয়ে যাও।
স্বাধীনতা তুমি একবার ফিরে আসো।


স্বাধীনতা তুমি এখনো বন্দী না কি কারো আস্তাকুড়ে?
নেপথ্য কোন বন্দুকের নল তোমার পিঠে ঠেকে আছে?
কিংবা বিদেশী কোন হিংস্র শকুন তোমাকে তাড়া করে ফেরে
বন্য শূয়র পথ রোখে?
তাই ভয়ে আসো না বাইরে আলোকে
এত মানুষ জনতা মিছিল দেখেও।
সে কেমন করে হয় স্বাধীনতা?
এত লাখো জোয়ান শহীদের রক্ত যার গায়
এত কল্পনার আদর চুমু যার কপালে আঁকে মায়
এত বীরসন্তানের বীরত্বগাঁথায় যারে স্মরণ করে লাখ বাবায়
ভাই ও বোনের অযুত বাসনা যারে নিত্য ঘিরে রাখে
প্রি্ম প্রিয়তমা ঝাপসা চোখ অঝোর কান্না যার তরে
মাঝি ও ঘাটের মানুষ পাড়ে নিবে যারে ডাকে
কিশোর কিশোরীর স্বপ্নের মাঝে যে জেগে থাকে
অবোধ শিশুও যারে চায় দোলনার পাশে
কবি সাহিত্যিক যারে কবিতা উপন্যাসে
শিল্পী তাঁর রং তুলি কল্পনা ক্যানভাসে
দেশপ্রেমিক জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা লাখ সৈনিক
যারে এখনো বুক দিয়ে আগলে রাখার জীবন বাজি রাখে।
তার কিসে ভয়? কে তারে বেঁধে রাখে, পথ রোখে?