আমাদের বাগানে একটি প্রবীন শিমূল গাছ
সব গাছ ছাড়িয়ে বিরহী সে ছুঁইছুঁই আকাশ
মেঘ-বৃষ্টি-ঝড় আসে, শন শন বাতাস
ঈগল, শকুন, গিদরি উল্লাসে, হাঁকেরে বাজ।
প্রাণ কাড়া কোন ডাক এলে সবার আগে
ও-ই শোনে দূরাগত দুর্বোদ্ধ সে আওয়াজ
মাভৈমাভৈ রাগে দেদোল দেদোল দোলা লাগে
গৈরিক ছন্দে নৃত্যানন্দে নাচে রে সন্যাস।


ওর কোমল প্রাণ কোমল শাখা অল্পতেই আহত
স্পর্শ কাতর পাতা শিশির ভারেই ন্যুব্জ-বৃন্তচ্যূত।
বৈরীঝাঁপ আগ্নি খরার তাপ প্রথম আসে ওর গায়
শীতের কাঁপন দুঃখের দহন ও ই আগে টের পায়
ওর পাতা ঝরা দেখলেই বুঝি মঙ্গা আসছে গাঁয়।


বসন্ত আসন্ন সে কথা ও-ই প্রথম আমাদেরে জানায়
মাঘের বেদনা উপেক্ষা করে ভোরের ভেজা কুয়াসায়
ও-ই ফোটায় শুভ দিন আসার প্রথম রাঙা ফুল।    
ফাগুনের কোকিল বসন্ত বউড়ি সোনা ঘুঘু বুলবুল
প্রথম গায় ওরই রৌদ্রোজ্জল ভোরের আঙিনায়।
চৈতের বাতাসে ভালবেসে উড়ায় শুভ্র বাসনা
উড়ন্ত মেঘ কবিতার মত বেদনার কান্না।
দুর্বল টেকসই আর ঝড়ে ভাঙে বলেই
আমরা করি না তার কিছুই মূল্যায়ন
অখ্যাত কোন এক গেঁয়ো কবির ভাগ্যের মতন।