একটি প্রার্থনাঃ  বহুদিন পর আবার আপনাদের কাছে ফিরে এলাম। নেপথ্যের সকল ভুল-ত্রুটি  ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছ। আপনার হয়তো অনেকেই জানেন, আমার এক ভাইয়ের মরণ ক্যান্সার আমাদের সকল  সংসার সুখ কবিতার দিন কেড়ে নিয়ে গেছে। তবুও স্বার্থপরের মত আবারও কবিতা নিয়েই এলাম। কবিতা আর বিধাতাই যেন এখন বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয়। সর্ব শেষে আপনারদের সকলের কাছে আমার ভাইয়ের  সেই  দুরারোগ্য রোগ মুক্তির দোয়া চাই।


---------------------------------------------------------


মৃত্যুর সাথে আমাদের দেখা প্রতিদিন
প্রায়ই মুখোমুখি চোখাচোখি এ পথে সে পথে
মৃত্যু আর আমরা, আমরা আর আমাদের মৃত্যু।


নানা কাজ নানা ছলে ছায়ার মত উপস্থিতি
আসা যাওয়া চোখ চাওয়া ছোট বড় অনুভূতি
এক রকম চেনা জানা হৃদ্যতার ভাব সখ্যতি
জন্মে গেছে আমাদের মাঝে। মৃত্যু আর আমরা
এখন এক ভাড়াটে বাড়ির এক ছাঁদের বাসিন্দা।


আরো ঢের জানাশোনা আমাদের অপমৃত্যুর সাথে
তার সাথেই বেশি ওঠা বসা হাসি কান্না দিনে রাতে।
আমাদের ঘর গৃহস্থালি থেকে শুরু করে উৎসব পার্বণে
তার এক রকম একচ্ছত্র আসা-যাওয়া।চেতন অচেতনে
কোন না কোন ভাবে তার মুখোমুখি হবেই আমাদের।
এমন কি ঘুমভাঙা বিছানা, তার আশপাশের মেঝেয়
আমাদের মৃত্যু স্বপ্নগুলোর শিয়রের খুব কাছা সে যে
বসে আমাদেরেই দেয় মৃত্যু শান্তনা, অশ্রুহীন কান্না।


সেই যে বাবা মারা যাবার পর মৃত্যু আর অপমৃত্যু
দৈনন্দিন কাজের মত খুব পরিচিত এক কাজ
খুব পরিচিত ঘটমান ঘটনা সমূহ আমাদের কাছে।
ঘরে খাদ্য মৃত্য্য, স্বপ্ন মৃত্যু, সুখের মৃত্যু, চোখের মৃত্যু
প্রণয় স্পর্শ আলিঙ্গন আবেগের মৃত্যু, দিন দিন মৃত্যু
ক্ষয়ে যাওয়া- খুলে পড়া বাকী সংসারের।
আর বাইরে মাঠের ফসলের মৃত্যু, হালের বলদ
ফুল পাখি রাস্তা ঘাট নদীর মৃত্যু, মিছিলের মানুষ মৃত্যু
বিবেকের অপমৃত্যু মৃত্যু, বিশাল এক পৃথিবীর মৃত্যু
মানুষের সামান্য স্বার্থের কাছে।


দুঃখের মৃত্যু দেখি নি যে এমনও নয়!
তবে সেই রাক্ষুসের গল্পের মত:
এক দুঃখ মরলে হাজার দুঃখ জন্ম লয়
প্রজা মরলে রাজাসম দুঃখ এসে সামনে দাঁড়ায়।
আর সুখ মরলে একেবারে মরে একেবারে মৃত্যু হয়
চিতার আগুন গোরস্তানের মাটি এ ছাড়া
আর তার থাকে না কোন শেষ আশ্রয় শেষ পরিচয়
তবে যাবার বেলা একা নয়, সাথে আরো কিছু সুখ
আরো কিছু অনাগত দিন রঙিন স্বপ্ন সাথে লয়ে যায়।
এ হল আমাদের মৃত্যু- অপমৃত্যু -সুখ আর আমরা।