হে আত্মমগ্ন সমাজের কীট, সমাজের প্রাণকে জায়গা দাও,
সম্মানের জায়গা অধিকারের জায়গা বাঁচার মত বাঁচার অধিকার দাও।
সমতার গল্প মাঠে মদয়ানে না উচ্চারণ করে মন্ত্র তোমার সমাজে লাগাও,
যারা সমাজের প্রাণ হয়ে বাঁচিয়ে রাখে সর্বনিম্নে থেকে তাদের জায়গা দাও।।


ওই গায়ের গন্ধে মাখা শ্রান্ত মজুরকে বিশ্রাম দাও শান্ত হবার অধিকার দাও,
জীবনের পথে যুদ্ধে নামা সংশপ্তক অঙ্গহীন পথিকের মুখে শ্রদ্ধার আহার দাও।
মাথা নত না করা ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধের রিক্সায় চরে গন্তব্যপথ পারি দিয়ে তাকে নিঃশ্বাসের সুযোগ দাও,
হাফ ছেড়ে বাঁচতে দাও যে জোয়ান লৌহ যন্ত্রের সাথে জীবন বাজি রেখে কর্মেদীপ্ত চঞ্চল তাকে জায়গা দাও।।


ভবনের যে উচ্চ আসনে আজ আসিন তুমি সেই প্রতিটি ইটে ইটে লেগে থাকা ঘাম নৈপুণ্য শিল্পীর,
অধিকার দাও তুমি এক মুঠো অন্যের জ্বালায় রাস্তার মাঝপথ পারি দেওয়া অসহায় চোখের।
ওরা মানুষ ওরা কর্মজয়ী জীবনের স্বাধকে তুচ্ছরূপে দেখে জেগে থাকে অতন্দ্র,
এদের বাসনা মনের চাওয়া দৃষ্টির চাহনি নিদারুণ রুক্ষ নেই আত্মলোভের কোন মন্ত্র।।


যতদিন এরা সেবার নামে জীবনের প্রতিটা ইচ্ছাকে মৃত্যুপথে ঢেলে দেবে ততদিন চোখে ঘুম পাবে,
এরা দুর্নীতি জানেনা বুঝেনা শিক্ষিত শয়তানদের ছল চাতুরতার ফাঁদ থেকে মুক্তি কিভাবে নিবে।
এরা লড়ে যায় নিজ আত্মার সাথে মমতাহীনে গড়া শহরের সাথে,
এরা নিজ ছোট্ট কোমল সন্তানের মুখে একফোঁটা দুধ ঢেলে দিতে চলে অগ্নিময় পথে।।


এইযে যার কাঁধে বই খাতা শোভিত ব্যাগের বহর থাকার কথা হাতে তার থলে,
রৌদ্রদগ্ধ দুপুরবেলা দু'পয়সার জন্যে রাস্তার কুকুরের সাথে মিতালী করে চলে।
এদের ভাষা আমরা বুঝিনা ভাবি এরা পাপের ফলভোগের দিনে আছে,
অথচ এদেরই ভাষা রক্ষার তাগিদে ফেব্রুয়ারীর রাজপথে রক্তের ঢল নেমেছে।।


কতকাল ধরে কতিপয় হারামজাদার হাতে সমাজের নেতৃত্ব উল্টে পরে আছে,
সেই হাতকে জ্বালিয়ে দিতে ৬৯,৭১-এ লাখো প্রাণের গঙ্গা বয়েছে আগুন জ্বলেছে।
তারপরও ভদ্র সমাজের চাঁদরে ঢাকা শয়তানদের হাতেই পুরো জীবনের অস্তিত্ব,
মুক্তির মিছিলে বাড়েবাড়ে গুলি নেমে আসে কুক্ষিগত থাকে তাদের হাতেই শক্তিমত্ব।।


জায়গা দাও ওই দু'টো চোখে বকের মত তীক্ষ্ণ দৃষ্টি করা রাতজাগা জেলের ঘুমানোর,
কণ্ঠে একটু জল দাও পথের পর পথ চলা সংস্থান খোঁজা ক্লান্ত ব্যর্থ বেকার যুবকের।
দিনের সূর্যের সাথে যারা জেগে ওঠে ঐসব বাস্তুহারা নারী নাগরিকের তরে জায়গা দাও,
খুলে দাও প্রাণের মঞ্জিল আসন দাও সিংহাসনে ওই মেধাবী বালকের মাথায় রাজমুকুট দাও।।


কি বলিবো আমি অধম অপদার্থ বলার কিছু নেই সবাই জ্ঞানী সব বুঝে,
তাদের কি আর জ্ঞানদানের সাধ্যি আমার আছে এযেন আত্মলাভ হচ্ছে নিজ খ্যাতির খোঁজে।
না'গো ভুল বুঝোনা মোরে আমি খ্যাতি চাইনা সত্যের পথে অখ্যাতিই মোর কাম্য,
যদি কিনা গর্বের কথা বলিতে পারি মোর সমাজের পথের বর্ণনা গাথিতে অভব্য।।


দাওগো জায়গা দাও এ আমার আদেশ নয় জীবনের কর্ম আমার এ আমার অনুরোধ তব পদে,
দেখো ওরাও মানুষ একটু দেখো তোমার থেকে কত কষ্টে এরা খিদে পেলে পায়না খেতে।
অমর হবার পথ খুঁজে কেন বেড়াও বৃথাই দেয়ালে আবদ্ধ গবেষণার চত্বরে?,
পুরো পৃথিবীটাই আজ অন্যায়ের দেয়ালে আবদ্ধ ব্যথিত যন্ত্রণা মানবতার বুক জুড়ে।।


একটু হাসি থামাও হে ঝমকালো দালানের কুপে আবদ্ধ যুবক যুবতির দল,
রাজপথে পৃথিবীর অধিকার আদায়ের মিছিলে চলরে সবাই চলরে চল।
থেকো'নাকো আর চুপটি করে চোখে রঙিন চশমা এঁটে চোখকে অন্ধ করে,
মনোচোখে দেখো পৃথিবী কাঁদে নিজের ব্যাথায় বুক ধরে, গান ধরে।।


জায়গা দাও অন্ন দাও অধিকার দাও সবার তরে না'যেন কেউ মরে পথে মাঠে ঘাঁটে,
দেখো তোমার নামও শোভিত হবে সেইসব মহা পুরুষের নামের সাথে সোনালী পত্রপটে।।


১৩-০৮-২০১৬