কি যেন মনে করে একদা সে এসেছিল মোর ঘরে
রিনি ঝিনি ঝিন্ নুপুর পায়েতে বিকেলের অবসরে,
জানালার পাশে রয়েছি বসে খােলা রেখে বইটিরে
উদাস নয়ন গগণের নীলে ডুবে গেছে কবে ধীরে।


ভাবনার তরী উজানের স্রোতে হারিয়ে ফেলছে ঘাঁট
অজানা শহরে ঘুরে-ফিরে মন ছেড়ে নিজ তল্লাট,
রিনিঝিনি তালে নুপুরের ধ্বনি বাজিল হঠাৎ কানে
ভাবনারে ঠেলে অবাক নয়নে দেখেছি দুয়ার পানে।


দেখেছি দুয়ারে রয়েছে দাঁড়ায়ে লাজে নত দুই আঁখি
ঝাপটা হাওয়ায় কেশরাশি মুখ আধেক দিয়েছে ঢাকি
বিকেলের আলো পড়িছে এসে নিটোল তারি গালে
রূপ তার যেন পড়িছে খসে লাজেরে দুহাতে ঠেলে।


দৃষ্টি যুগল করিছে বন্দী মোহমাখা আবেশী কাল
অবাক নয়ন, অপলক দেখা, ক্ষনে বিছায় ইন্দ্রজাল,
ওড়নার খুঁটে নখর-পীড়ণ, আনত নয়ন তুলে
চাউনি মেশালো, বুকখানি মোর সহসা উঠল দুলে।


হাসির রেখা অধর কিনারে লাজে কম্পিত স্বরে
বলিল শেষে 'অবাক হয়ে কি দেখিছ ওমন করে?'
ভাবিলাম মনে কি হলো আজ নিজেরে খূঁজেনা পাই
এমনি করে কভু তারে এর আগেতো দেখি নাই!


দমকা বাতাস ফেলে গেল শ্বাস জানালার পথে এসে
মাতামাতি তার একি অনাচার! গায়ের সুবাসে মিশে
ওড়না ঢাকিছে যৌবনভার তারে নিয়ে টানাটানি!
হায়রে বাতাস! লাজের আভাস নাই কি একটুখানি?


লাজরাঙা তার মুখখানি দেখে বিকেল বুঝিবা লাজে
সবখানি রঙ মেখে নিয়ে সাজে লাজুক বধূঁর সাজে
জিজ্ঞাসী তারে মৃদু স্বরে ডেকে 'কিছু কি তোমার চাই?'
না বলে কথা দ্রুত ছুটে যেতে থেমে গেল সহসাই।


পিছু ফিরে চেয়ে দেখিল ক্ষনেক, হাসির সম্মোহনে
বিবশ হিয়াতে দোল দিয়ে শেষে ছুটিল বাহির পানে
জানালার পাশে বই হাতে বসে তখনো আমি একা
উদ্বেল পরানে নাচিল ময়ূর, ডেকে গেল রব- কেকা।