ঘর বেঁধেছে আশা হীন বুকে নিরাশারা আছে যত
বিবাগী পথিক চলেছি সব-খোয়া জুয়াড়ীর মত
যত ধন ছিল হলো হাত-ছাড়া
হলো সবে পর আপনার যারা
আশাহত আমি হয়ে সব-হারা, বুকে জাগে ব্যথা-ক্ষত
উপহাসে হাসে এই নিদয় সময় ভেবে দিন অনাগত।


ভুলে গিয়ে সব ছুটি সমুখে কিনারা কোথায় হায়
অথৈ সাগরে খেলিছে তরঙ্গ, বইছে তুফান বায়
নীল আসমান মেঘে ঢেকে যায়
তড়িতের ন্যায় ব্যথা চমকায়
পাল যায় ছিঁড়ে, হাল ধরে রাখা হলো যে বিষম দায়
দিশেহারা আমি পাগলের প্রায় যাতনা-আঘাত-ঘায়।


কূঁড়ি থেকে ফুল যতনে ফুটলাম সিঞ্চনে প্রেম-বারী
ফুল-সাথে কবে উঠিল বাড়িয়া বুঝিনি কাঁটা যে তারি
গাঁথব মালা-হার, হয়েছি বে-ভুল
বিঁধিল কাঁটা তার, তুলিতে সে ফুল
হারালো সূঁচ-ডোর, আশা ভণ্ডুল বিফলে দিবস পারি
আশা-পথে এসে সুখ-রাশি সব বেদনা করেছে চুরি।


ধূলি মেখে গায় দখিনা পবন কেঁদে ফিরে দেশে দেশে
বসন্ত আমার হয়েছে বিদায় অকারণ-নিরুদ্দেশে
স্বপন ছিল যতো করেছে হরণ
তাপিত বুকে জ্বলে রৌদ্র-দহন
ধু-ধু মরীচিকা দেখে দু'নয়ন অযাচিত শত ক্লেশে
পাহাড় আগুলিয়া কষ্টরা সবে আসে যম-দূত বেশে।


বাড়িয়ে দুহাত পাই কালো-রাত আলো বুঝি কোথা নাই
বন্ধুর পথে দোসর বিহীন চলি আজ একা তাই
তবু জাগে আশা বুকের কিনারে
পাব বুঝি দেখা খুঁজে ফিরি যারে
উদিবে অরুণ নব-দিন-ভোরে নিশি চিড়ে সহসাই
সেই মন্দিরে পৌঁছবে বাণী, বুকে তার নিবে ঠাঁই।


বুকের রক্ত কালি করে আজ আঁকি সে ভোরের ছবি
এ নিশি-ঘোর উজল করিতে উদিবে আলোক-রবি
আনিবে স্বর্গ যে দিল হেলা
মধুর করিবে নিরস এ বেলা
জীবনেরে নিয়ে এ জুয়া-খেলা হবে অবসান কবি
লাগবে নিছক যেন ছেলে-খেলা ব্যথা-গীতি-ভৈরবী।।