(দীর্ঘ পথ পরিভ্রমণ শেষে পথিক ও ব্যথা-বিষে ম্রিয়মান কবির কথোপকথন)


পথিকঃ হে কবি!
কে দিয়েছে তোমার প্রাণে
বিষাদ এত ঢেলে,
তোমার কথায়, তােমার গানে
ব্যথাই কেন মেলে!
ছল ছল ছল নয়ন পাতা
কোন পাষাণীর টানে?
কার চরণে দাও উপাচার
বাণীর পদ্ম এনে?


কবিঃ হঠাৎ দেখা অচিন পথিক
পথের সাথী ওহে!
জানতে কি চাও কোন বেদনায়
নয়ন পাতা বহে?
কোন পাষাণী যার তরে প্রাণ
বলছি শোন তবে,
দ্বৈত রথে এসে ছিলাম
স্বর্গ হতে ভবে।
সে মোর রাণী, এই সে পথেই
হারিয়ে গেছে দূরে,
দোসরহীন এ শূন্য হিয়া
ব্যথায় শুধু পােড়ে।
অমোঘ আশায় পথের ধূলোয়
খুঁজি পায়ের রেখা,
কপাল লেখায় পথের বাঁকেই
পাই যদি তার দেখা।


পথিকঃ বৃথাই কবি গান গেয়ে যাও
বৃথা বাণীর মালা,
মিছে মায়ার কূহক জালে
বৃথাই বাড়াও জ্বালা।
যার লাগি এ কাঁদন তোমার
কথায় ফোটাও ফুল,
হয়তো সে যে রয়েছে বেশ
তোমার কাঁদাই ভুল।
তাহার দেশে হয়তো ফাগুন
স্বর্গ-শীতল কাল,
তোমার বুকেই দহণ জ্বালা
বিরহী বৈতাল।


কবিঃ ওগো পথিক! হয় হোক বৃথা
দুঃখ কিবা সুখ,
মোর নয়নের আরশী হতে
হারায় না তার মুখ।
আমার প্রাণের ব্যথার কথন
মিলায় মুক্ত বায়ে,
গুঞ্জে যদি কভু তারি বাগে
ভ্রমরী গান হয়ে।
সে আশাতেই কাব্য-গানে
বুকের রক্ত ঢালি,
সব পথিকে সে গান শোনাই
ব্যথার সুর-কাকলি।............................চলবে


বিঃদ্রঃ কবিতাটিতে পাঠকের ধৈর্য‌্যের পরীক্ষা নিতে চাইনা বলেই এর শেষাংশ পরবর্তীতে প্রকাশের আশা পোষণ করছি।