গোধূলীর আলো পড়িছে ঝরিয়া, সোনারঙ মাখা জল
সে জল-ঢেউয়ে ভাসিতেছে তাহার মুখছবি নির্মল
সেই ছবি পানে অপলক চায়, দু'হাতে জলেরে নাড়ি
মুছে তারে লাজে, কলসী কাঁখে ফিরে আসে রোজ বাড়ি
নিজেরই হাতে ঘর-দুয়ার সব করিয়া সে পরিপাটি
চোখে মুখে ভাব যেন হইয়াছে গৃহিনী যে অতি খাঁটি
সদা হাসি মাখা মুখ খানি তাহার জুড়ায় মায়ের অাঁখি
কভু সোহাগে ডাকিয়া কাছেতে চুলে দেয় তেল মাখি
চেলী পাঁকায়ে বাঁধে ফিতে তায় ফুল-তোলা কায়দায়
নয়া শাড়ীখানা হাতে দিয়া বলে দেখিতো পড়িয়া আয়
কাঁচা হাত তার শাড়ি পড়িতে এদিকে ওদিকে খসে
কভু রাগে মায়ে লাল করে মুখ কভু খুন হয় হেসে
দুই দিন পরে অপরের ঘরে যাইবি তুই বুড়ি মেয়ে
পাড়া-পড়শী হাসিবে দেখি্স নানা কথা তোরে কয়ে
ঘোমটারে টেনে দেখে মায়ে মুখ ছলছল করে চোখ
পাছে পরে ধরা মেয়ের সমুখে হাসিতে লুকায় দুখ
বুকে অাগলিয়া রাখিছে যতনে পরের ঘরের ধনে
নিজ বাপ-মা'র মুখছবি খানি পড়িছে আজ স্মরনে
এমনি বয়সে আসিয়াছে এ ঘর তাদেরি মমতা ছেড়ে
ছলছল চোখে পানি এসে যায় রাখতে পারেনা ধরে
ছোট মেয়ে আসিয়া ধরে বায়না আঁচল ধরিয়া টানি
আমিও পড়িবো বুবুর মতন মা শাড়ি দাও একখানি
আহ্লাদে মাতা পড়ে গলিয়া মেয়ের কথাটি শুনে
বুবুর মতন বড় হইলে পরে পড়িস্ শাড়ি তখনে
লাল পেড়ে শাড়ি দিবো কিনিয়া জড়ির ঘোমটা সাথে
মাথার টিকলী গড়াইয়া দিবো সোনার বালা হাতে।।