[[এক অাষাঢ়ে দেখল ধরা
                          এক অাষাঢ়ে বর,
আরেক অাষাঢ় আসার আগেই
                        ভাঙ্গল কন্যার ঘর।
আসল তুফান উজান ধরে
                         ঘূর্ণী যে তার ঘুরে,
এক নিমেষেই টুটলো বাঁধন
                          কপাল গেল পুড়ে।]]


আসিল আবার শীতের রাতি
হিম হিম কাঁটা দেয়া,
আকাশ গাঙে ভাসিল আবার
নিঝুম কুয়াশা খেয়া।
বনে বনে যেন পড়িয়াছে সাড়া
পাতা ঝরঝর খেলা,
রবি ফসলেতে ভরিয়াছে মাঠ
চুমিয়া মাটির ঢেলা।
সরষের ক্ষেত মনে হয় তাহারে
বিছানো হলদে পাটি,
শিশিরেতে নেয়ে হিমবায়ে দুলে
লতানো মটর শুটি।
মসুরের ক্ষেতে সবুজের হাসি
রোদ চমকায় গায়ে,
অস্তাচলে মুখ লুকায় সুরুজ
কুয়াশা চাদর ছায়ে।
সটান দাঁড়াইয়া আকাশের পানে
তাকাইয়া তরুর শাখা,
তাহারি 'পরে শীতের পাখিরা
রৌদ্রে ভিজায় পাখা।
ছোট নদীটার শুকায়েছে বুক
কোমর সমান জল,
শুকনো পাতায় উঠিয়াছে ভরি
বাতাবি গাছের তল।
মন উঠেনা তা'রি তলে যাইতে
বসিতে তাহার ছায়,
কিষাণ কন্যার সেই দিনগুলি
হারায়াছে নিরালায়।
শত যাতনায় টুটিয়াছে হিয়া
হাসিরে গিয়াছে ভুলে,
আলতার রঙ হইয়াছে ফিকে
চিরুনী উঠে না চুলে।
কথায় কথায় দু'চোখ আপনি
হইয়া উঠে তা'র ভারী
কাজলদানীতে কাজল শুকায়
হাতে না জড়ায় চুড়ি।
বিজনে বসিয়া ভাবনা ভাসায়
নয়ন ধারার স্রোতে,
কপাল-লেখায় পুড়িলো কপাল
প্রাণ ধরি কোন্ মতে।
জীবনের পথ আঁধারে ঘেরা
নিভিয়াছে সব আলো,
ছাড়িয়াছে হাত, সব দিয়া যারে
বাসিয়া ছিল সে ভাল।
যাহা ছিল তাহার দেহ মন-প্রাণ
সবি সঁপে তাহার পায়,
অবহেলা এত কেমনে কিনিলো
এত অপমান-জ্বালা হায়।
ভালবাসা-বাসি, প্রণয়ের গাঁথা
আসলে কি অভিনয়?
বিনা দোষে পাওয়া শাস্তি আজি
প্রাণেতে কেমনে সয়?