কাঁঠালিয়ার জল...
তোর ঢেউয়েতে নিত্য বাজে খুশির কলরোল
নাকি পাড়-ভাঙ্গা কোন্ দুঃখ-ব্যথীর বিরহী কল্লোল!
তোর বুকেতে হেলান দিয়ে দু'পাড় থাকে শুয়ে
জুড়ায় বুকের সকল জ্বালা শীতল জলে ধূয়ে
এ-পাড় ও-পাড় রয় তাকিয়ে দুইয়ে দুইয়ের পানে
যুগ-জনমের সখ্যতা বয় জোয়ার-ভাটার বানে
সুরুজ কানে গল্প শোনায় ঊষায় পূবের পাড়
ও-পাড় দেখে মগন হয়ে রূপের ছটা তার
চুমছে ও-পাড় নিত্যদিনই অস্তাচলের রেখা
সোনার আলোয় পড়ছে ও-পাড় উদয় পাড়ের লেখা
তোর বুকে যায় নৌকা ভেসে হাওয়ায় তুলে পাল
ভিঁনদেশী কোন মাঝির বৈঠা তোলে জলে তাল
ছলাৎ স্বরে কস্ কথা তুই নায়ের গলুই শোনে
উদাস আকাশ তাকিয়ে তোর জোয়ার-ভাটা গোনে।


কাঁঠালিয়ার জল.....
তোর বুকেতে কাটছে সাঁতার মেঘের ছায়াতল
তোর স্ফটিক জলে খেলা করে বালি-হাঁসের দল
জেলের ডিঙি দোদুল দোলে ঢেউয়ের দোলনা চড়ে
রাতের আকাশ দেখিস্ কি তুই বুকের আরশী ধরে!
ছলছল তোর উছল ধারায় নিত্য নতুন গীতি
নতুন স্রোতে ভাসে কি তোর অতীত দিনের স্মৃতি?
উজান ধরে আসে যে জল ভাটায় ঠেলিস্ তারে
তেমন করেই ভুলিস্ কি তুই সে-দিন যুগান্তরে!!
......
কাঁঠালিয়া, তোর আপন-ভোলা মন.....
হারায় দূরে অচিনে তোর কতই আপন জন
তোর জলেতে নেয়ে যারা করতো শীতল গা
বালুতটের বিশাল পাতায় চিন্ মাখাতো পা
ভুলিস্ তাদের নিমেষে তুই নতুন দিনের তানে
বুকের ধারায় তুলিস্ কাঁপন নতুন কন্ঠ-গানে
তোরই মতন যায় ভুলে ওই দীঘল বালুর তট
হাজার দিনের হাজার স্মৃতি- কালের চিত্রপট
আসা-যাওয়া, ভাঙ্গা-গড়া, দু'পাড় জুড়ে খেলা
স্বাক্ষী হয়ে থাকলি চেয়ে নিখিল ধরার লীলা
কিশোর দিনের বন্ধু আমার কাঁঠালিয়া নদী
স্মৃতির খেয়ায় দিস্ দোলানী আমার আজোবধী।।