সাধু বাবা ধ্যানে বসে জপে নানান মন্ত্র
'সিদ্ধি লাভে' রপ্ত করেন হিতের হরেক তন্ত্র
'সাধন নচেৎ পাতন' পণে কাটিয়ে দিলেন কাল
কাঁচা জটে পাক ধরালেন, কুঁচকে গেছে গাল
চোখ দু'খানি রক্তবরণ, আওয়াজ বড় মিঠা
দাঁড়ি-গোঁফে মুখ ভারী আর লম্বা চুলে গিঁঠা
আখড়াটা তার সদাই মুখর, অনেক লোকের ভীড়
হাজার রকম 'নালিশ' নিয়ে করাতে তদবীর।


ছেলে-বুড়ো, মন্দ-ভালো, এমনি হরেক জন
নিত্য আসে দিনে-রাতে পেতে তার দর্শন
চক্ষু বুঝে সাধু বাবা মন্ত্রে ঝাঁড়েন লোকে
'কাঁসা'র লোটার খানিকটা জল ঢালেন মন্ত্র ফূঁকে
তাতেই ব্যাস হয় উপশম হাজার সমস্যার
সবার মুখেই সাধু বাবার শুনি জয়-জয়াকার।


হঠাৎ এমন কান্ড হলো সন্ধ্যাতে একদিন
আখড়ায় এক লোক এলো রোগা-পাতলা ক্ষীণ
সাধু বাবার কাছে গিয়ে বলে বিনয় স্বরে
"বাবা, আমার ভাগ্য ফেরান যদি দয়া করে"
'কর্ম কি তোর?' বাবার কথায় জানায় "আমি চোর"
"পরের ঘরে সিঁধ কেটেও ভরে না উদোর'
চক্ষু বুঝেন সাধু বাবা, মন্ত্র পড়েন জোরে
'কাঁসা'র লোটায় হাতটি দিয়ে চমকে দেখেন ফিরে
একি কান্ড! লোটা উধাও!!, নাই সমুখের জন
সাধু চেঁচায় 'জল নিবি নে, লোটা দে বাপধন!'।।