শীতের শেষে বসন্তের গোধূলী লগ্নে
বিজলীর লুকোচুরি খেলা দিয়ে যায়
অনাগত বৃষ্টির পূর্বাভাস!
অনেক উপরে -
মহাশূণ্যে ব্যস্ত মেঘের ছুটোছুটি,
ঘর্ষণে ঘর্ষণে ডেকে যায় গুড়ুম গুড়ুম -
সে কি তর্জন গর্জন!


দিগন্ত বিস্তৃত রহস্যময় ভাসমান উন্মুক্ত আকাশ!
মন পাগল করা ছন্দময় দখিনা হাওয়া,
ঝিরঝির প্রথম ঝরা বৃষ্টিতে
ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ
স্নায়ু সাগরে ঝড় তুলে যায় প্রবল বেগে..!
বাতাসের ঝাপ্টায় বন্ধ জানালার ফাঁক দিয়ে গায়ে এসে লাগে-
ঝিরঝির ঝরা বৃষ্টির ক্ষুদ্রাণু রেণু!
হিমেল সেই পরশে
নেচে ওঠে তনু-মন!


হৃদয়ের গহীন কোণে বুঁদ বুঁদ করে ওঠে
পুরান সে কথকতা!


স্মৃতির দুয়ারে দিড়িম দিড়িম
আঘাত হানতে থাকে-
হৃদয়ের গভীরে জমে থাকা নীল রঙের বেদনাগুলো,
সে আঘাতে জর্জরিত হতে থাকে আমার হৃদয়গুহা।
এক সময় মড়মড় শব্দ তুলতে তুলতে
তড়াক করে খুলে যায়- আমার স্মৃতি-কপাট।
ভেতর থেকে তড়িৎ গতিতে বেরিয়ে আসে
বহুদিন হতে জমিয়ে রাখা-
স্মৃতির গোপন নথিপত্র!


এক অব্যক্ত আবেগ আমায় জড়িয়ে ধরে আষ্টেপৃষ্ঠে
হঠাৎ চঞ্চল হয়ে ওঠে আমার পঞ্চ ইন্দ্রিয়!
অনুভবে জেগে ওঠে অদ্ভুত এক উপলব্ধি ক্ষমতা,
আমি বুঝতে পারি -
কে যেনো আমায় কাছে ডাকে!
আমি শুনতে পাই -
বহুদূর হতে ভেসে আসা এক অনাগত আহ্বান,
আমি শুনতে পাই-  
বড় অচেনা সেই আহ্বান।
বহুদূর থেকে কাছে ডাকে আমায়-
আমি বুঝতে পারি।


আমার গণ্ডদেশ বেয়ে অজান্তে
নেমে আসে নোনা জল!
সেই নোনা সাগরে ভাসতে থাকি আমি-
খুঁজে পাই না তার তল!
ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধে
আমি অনুভব করি যেন অন্যরকম টান!!


মাটি থেকেই সৃষ্টি আমার ;
সৃষ্টি আরও অন্য সবার,
এ কি সেই টান?
সৃষ্টির টান!


বিড়বিড় ঠোঁটে আমি উচ্চারি -


হে আমার পদাঘাতে সিক্ত মাটি!
তব বক্ষোপরেই হবে আমার
অন্তিম শয়ান!
তব হতে আমি হয়েছি সৃজন-
তোমারই কোলে নিজকে করবো সমর্পন
ধীরে ধীরে তোমাতে মিশে গিয়ে
নিজেকে দেবো বিসর্জন!


কোনো একদিন পরকালে-
আল্লাহর ইচ্ছায়-


তব হতে লভিব পুনর্জীবন ফের-
ঘটবে আমার উত্থান!!!


           _____♦_____


রচনাঃ- ৯ / ৩ / ২০০৯ ইং
মঙ্গলবার রাত,
মহাখালী ওয়ারলেস গেট, বনানী ঢাকা।