ছোট্টো বেলায়  যখন একুশ আসতো
তখন কিছুই  বুঝতামনা।


খালি পায়ে, হাতে কিছু ফুল নিয়ে যেতাম শহীদ মিনারে
ফুল অর্পণ করতে।


এটা যে কি উৎসব মুখর ছিলো।
আলাদা একটা অনুভূতি!
ঈদ ঈদ একটা ভাব,
কে কতো ভোরে উঠতে পারে।
তার একটা পাল্লাও চলতো।


খালি পায়ে দল বেঁধে
চলে যেতাম।


ভোর বেলা থেকে মাইকে
গান  বাজতো
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে ফেব্রুয়ারি।
আমি কি ভুলিতে  পারি।
আরো অনেক দেশাত্মবোধক গান।
প্রাণ জুরানো গান।


গানটি মনের মধ্যে  
শিহরণ  জাগাতো।
কিছুই বুঝতামনা।
তবুও, কি যে একটা ভালোলাগা।


আস্তে আস্তে  বুঝলাম
একুশ আমাদের
কি দিয়েছে।


কত শহীদের রক্তের
বিনিময়ে আমরা আমাদের
বাংলা ভাষাকে পেয়েছি।


সালাম, বরকত,রফিক, জব্বার
আরো অনেক নাম না জানা শহীদদের রক্তে রাঙানো
এই ফেব্রুয়ারি।


আরো অবাক হয়েছি
যখন শুনেছি,
আমার শ্বশুর ও ছিলেন
এই আন্দোলনে।
উনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়াশোনা করতেন।
উনারাই প্রথম শহিদ মিনার
তৈরি করেন।


আমার বড়োমামা,
মেজো মামাও ছিলেন
এই আন্দোলনে


আরো শুনেছি আমার বড়োমামা
ঢাকা মেডিকেল এর প্রথম ব্যাচ
আর মেজো মামা সম্ভবত
দ্বিতীয়  ব্যাচ।


ভাষা শহিদ শফিকুর রহমান
গুলিবিদ্ধ হলে,
আমার মেজো মামা তাকে
কাঁধে করে নিয়ে যান,
নেয়ার পথেই তিনি মারা যান।


মামা বলতেন ,
"মা কে মা বলে
ডাকবো বলেই সংগ্রাম  করেছি।
তারা আমাদের মায়ের ভাষাকে
কেড়ে নিতে চেয়েছিলো।"


১৪৪ ধারাকে অমান্য করে।
মিছিল মিটিং  করেছিলেন।


তাই তো আজ প্রাণ ভরে
কথা বলছি মায়ের ভাষায়।


আমরা তোমাদের  ভুলবোনা।