কত দিন মান দেখিতেছি স্রোত
নদীর তীরেতে বসে,

আসিবে এ কথা মনেতে জানিত,
ক্ষণিকের তরে পলক পড়িত,
আষাড়ের এক বৃষ্টির শেষে
ঠিকই আসিলে বারিস্রোতে ভেসে।

আমি’ত ছিলাম কূলেতে বসিয়া
তব পথপানে চেয়ে,
হটাৎ দেখি ভীষণ গতীতে
তব তরীটি আসিল ধেয়ে।

দেখিয়া তোমারে চোখ ভরে এলো,
সাধনা বুঝি সত্যি হলো,
হৃদয় পাতিয়া কহিলাম প্রিয়া
এস আমার’ই বুকে,
বাসিব ভালো জীবন ভরিয়া
মোরা থাকিব অনেক সুখে।

মৃদু হাসিয়া চেষ্টা করিলে
থামাতে কালের তরী,                  
দিয়েছিনু আমি হাতটি বাড়ায়ে
চেয়েছিনু হাতটি তোমার ধরি।

স্রোতের গতী যে এত বেশি ছিল
মোরা পারিনি তরীটা থামাতে,
মোর চোখের’ই সামনে দিয়া,
চলে গেলে তুমি ক্ষণিক আসিয়া,
অপলক আমি চেয়ে দেখেছি
পারিনি তোমাকে নামাতে!

সাধ ছিল মম অনেক মনেতে
কিন্তু ছিলনা সাধ্য,
মোরা চাইনি কেউ কাউকে হারাতে
তবু সময় করেছে বাধ্য।

একদিন জানি সাধ্য হইবে
পুরিবে অনেক সাধ,
সেদিন চাইলেই জানি পাব না তোমায়
এ কেমন সাজা দিল’যে সময়,
আজ জীবনের সুখ মলিন কেন?
করেছি কী অপরাধ?

অপরাধ ছিল তরীটাকে আমি
সেদিন থামাতে পারিনি,
অপরাধ ছিল সাতার না শিখে
কেন’যে সেদিন পানিতে নামিনি!

আরও ভূল ছিল দিশেহারা হয়ে
স্রোতের গতীকে বুঝতে পারিনি।

সাতার শিখিলে পানিতে নামিব
যাব, আজীবন তোমারে খুজে,
ভালোবাসা মোর তোমার সাধনা,
ভূল বলি কেন চক্ষু বুজে?

জীবনের তরে আজ তবু মোর
নেয় কোন অভিযোগ,

সময়ের গতি কভূ থামেনা,
আকাশ কখনো মাটিতে নামেনা,
আরো, কত’যে কঠিন বাস্তবতায়
চলে জীবনের যোগ-বিয়োগ।

জীবন স্রোতের উথাল জোয়ারে
কূলেতে একাকী বসে,
তরীটিকে তব বিদায় জানিয়ে,
বাস্তবতাকে মানিয়ে নিয়ে,
দেখিতেছি আজ সুখ দুঃক্ষের
জীবন নামের অঙ্ক কষে।

আমি পারিনি তব তরীতে উঠিতে
তাতে, কেন থামিবে তোমার যাত্রা?
                                
                                        
মোর ভালোবাসা পারে কি কাড়িতে
মোর প্রিয়ার’ই খুশি?

তরীটিকে তাই বিদায় জানিয়া,
দুখ যত, সব নদীতে ফেলিয়া,
তোমার পথের’ই শুভকামনা
হৃদয়েতে মম পুষি।
(৩০-০৭-২০১১)