স্পর্শসুখ
**********


এলে, ছুঁয়ে গেলে, আর
ধূমায়িত বরফকণায় আচমকা শিউরে উঠল ঘুমন্ত বীজ।


তার আগে একপৃথিবী ঘুম,
তারপরও অনন্ত নিঝুম,
মাঝখানের শিহরণটুকুই লিখে গেল অনন্ত ইতিহাস --
আমিও ছিলাম কোনোদিন, তোমার স্পর্শপিয়াসী।


সেই থেকেই নিজেকে খোঁজার সূত্রপাত।
অবেলার বৃষ্টিতে, সকালের কুয়াশায়, অথবা গোধূলির ধোঁয়াশায়
আলতো করে ছুঁয়ে দেখি নিজের উষ্ণতা।


খোঁজাখুঁজিতেই নিঃশ্বাসের যাওয়া আসা টের পাই,
টের পাই, এখনো আমি 'বেঁচেথাকা' নামক সন্ত্রাসের কবলে।
বীজ, ক্রমশ মহীরুহ হয়, ডাল ভাঙে,
হাহাকারে মনে পড়ে, আমিই তো চেয়েছিলাম
অঙ্কুরিত হতে, তোমার বিষাক্ত ছোঁয়ায়।


স্পর্শটুকু রেখে তুমি হারিয়ে গেছো,
আমৃত্যু উপত্যকা জুড়ে ছড়িয়ে দিয়ে গেছো বিরান তুমিময়তা।
হেঁটে চলেছি আমি, বেহিসেবি চলাপথে,
স্পর্শসুখের মৌতাত মেখে মেখে।


আমার সামনে নীল, পেছনে নীল, আকাশ নীল,
সমুদ্র নীল, স্বপ্নগুলোও নীল।
কেন এই নীলাভ সফর ?
এও কি দৃষ্টিবিভ্রম ?
নাকি তুমি হঠাৎ এসেছিলে, আর আলতো করে
রেখে গিয়েছিলে ক্ষণিকের নীল স্পর্শ,
যখন আমি বীজ রূপে ঘুমিয়ে ছিলাম তুষারের কোলে!


ইতিহাস মুছে যাবে না,
ক্ষণিকের শিহরণ, অথচ লেখা থাকবে চিরকাল,
আমিও ছিলাম কোনোদিন, তোমার স্পর্শপিয়াসী।


তবু মুখ ফুটে বলব না কোনোদিন --
এটা সম্পূর্ণ সত্য নয়,
অর্ধসত্য শিরোনামগুলি খুব দীর্ঘস্থায়ী হয় ------



আলোক মিশ্র।